আজ: বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ইং, ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

সাইফ পাওয়ারটেকের সুদক্ষ পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর উন্নতি

শেয়ারবাজার ডেস্ক : প্রায় ২০০০ কোটি টাকা ব্যায়ে নিজস্ব ফান্ড হতে ক্রয় করে। সেই ধারাবাহি কতায় বর্তমানে এনসিটিতে ১৪টি রেল মাউটেন্ট কী গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি) এবং ২৯টি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি) সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়া, আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এর উৎপাদনশীলতার সাথে সাথে বন্দরের উৎপাদনশীলতা বেশ বেড়ে যায় এবং বন্দরও বিশাল রাজস্ব আয় করছে। এছাড়া, বাংলাদেশের আমদানী রপ্তানীর প্রায় ৫৫ শতাংশ কার্গো হ্যান্ডলিং করে বছরে ১০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। এক পরিসংখ্যানে, ২০১৯ সাল হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) বন্দর ৬০ মাসে ৩৮২০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে।

উল্লেখ্য যে, এনসিটি টার্মিনালের ধারণ ক্ষমতা ১ দশমিক ১ মিলিয়ন টিইইউএস। কিন্তু বর্তমান টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড তাদের দক্ষতায় ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইইউএস উন্নীত করে। যা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী। এটি সম্ভব হয়েছে বর্তমান অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড এর সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও আন্তর্জাতিক বন্দরের টার্মিনাল অপারেশনে কর্মরত দক্ষ বাংলাদেশী জনবলের কারনে। যাদের বেশীরভাগ ১০ হতে ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক বন্দর ও টার্মিনাল অপারেশনের অভিজ্ঞতা ও সুনাম রয়েছে। এইসব দক্ষ জনবলকে বিশ্বের উন্নত বন্দর ও টার্মিনাল হতে উচ্চ বেতনে নিযুক্ত করে এনসিটি টার্মিনালকে আধুনিক টার্মিনালে রুপান্তরিত করে। বর্তমান টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল অপারেশনাল কাজ পরিচালনা করায় চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীরা, কন্টেইনার মালিকগণ এবং সর্বোপরি জাহাজের মালিকগণ অপারেশনাল কাজের ব্যাপারে সন্তুষ্ট হয়ে তাদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডকে প্রশংসাপত্র প্রদান করেন।

যাদের মধ্যে রয়েছে বিশ্বের বিখ্যাত শিপিং অপারেটর- মার্কস লাইন, এমএসসি, সিএমএ-সিজিএম, পিআইএল, সী কোনসোর্টিয়াম ইত্যাদি। চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে কেবলমাত্র সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড তাদের কাজের দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরুপ এই সকল আন্তর্জাতিক অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড এর অনুকূলে পারফরমেন্স সার্টিফিকেট প্রদান করে। এতে করে সারাবিশ্বে এবং আন্তজার্তিক উন্নত বন্দর সমূহে চট্টগ্রাম বন্দরের তথা বাংলাদেশসহ সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের সুনাম বেড়েই চলছে।

শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বাংলাদেশী টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড দেশের মূল্যবান সম্পদ ও দেশীয় দক্ষ জনবল কাজে লাগিয়ে আরও রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) হতে দক্ষতার সহিত টার্মিনাল পরিচালনা করায় প্রতিমাসে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড ২০০৭ সাল হতে জুলাই’২০২৪ সাল পর্যন্ত জাহাজ ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে তা শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, বাংলাদেশের জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠানের একটি মাইলফলক।

সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড ২০০৭ সাল হতে জুলাই’২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৩,৭৩০টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে। শুধুমাত্র এনসিটিতে জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে ৮,২৫১টি।

কোম্পানিটি ২০০৭ সাল হতে জুলাই’২০২৪ সাল পর্যন্ত কন্টেইনার হ্যান্ডলিং (শুধুমাত্র ডিসচার্জিং ও লোডিং হিসাব অনুযায়ী) করেছে- ২,০০,১০,২৯৬ টিইইউএস। শুধুমাত্র এনসিটিতে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে ১,১৪,৪৩,৭৩৯ টিইইউএস। এছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের দক্ষতার সাথে টার্মিনাল অপারেশন পরিচালনা করার ফলে ২০০৭ সালে যেখানে জাহাজের গড় অবস্থান ১০-১২ দিন ছিল, সেটি ২০২৩-২৪ সালে জাহাজের গড় অবস্থান এসে দাড়িয়েছে ২ থেকে আড়াই দিন। এতে করে আমদানী রপ্তানীর খরচ অনেকাংশে কমে যায়। যার সুফল ভোগ করছেন বাংলাদেশের সকল জনসাধারনগণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া হলে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। সরকার বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মূদ্রা হতে বঞ্চিত হবে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে আঘাত হানবে। এছাড়া, দেশের অর্থনৈতিকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। এই টার্মিনালে কর্মরত দক্ষ শ্রমিক, কর্মচারী ও এই টার্মিনালের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত বিভিন্ন খাতের জনবল চাকুরী হারাবে এবং বন্দরে অস্থীতিশীল পরিস্থিতি হওয়ার আশংকা রয়েছে- যা বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় কন্টেইনার টার্মিনাল। এই টার্মিনাল বিদেশীদের হাতে চলে গেলে সরকার তার নিয়ন্ত্রন হারাবে।

বন্দরের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, সর্বোপরি এই টার্মিনালের পাশে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত। যা রাষ্টীয় নিরাপত্তার ও গোপনীয়তার জন্য হুমকি হতে পারে। সুতরাং এই টার্মিনালটি বাংলাদেশী টার্মিনাল অপারেটরের দীর্ঘ সময়ের চুক্তি করা হলে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা আয়সহ বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.