আজ: শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

‘ইসকন’ নিয়ে নানা তথ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৫৮ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ১৯৬৬ সালের ১৩ জুলাই যাত্রা শুরু হয় ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস)। এটি মূলত ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কার্যক্রম পরিচালনার একটি সংগঠন। ইসকনের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মন্দির নির্মাণ, ধর্মীয় উপদেশ দেওয়া, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রচার, ভক্তি কার্যক্রম এবং দাতব্য সংস্থা পরিচালনা।

মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চার অংশ হিসেবে যোগব্যায়াম ও শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম করে থাকে সংগঠনটি।

বর্তমানে বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে ইসকনের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে কিছু দেশে সংগঠনটি নিষিদ্ধ। ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ।

ভক্তিযোগ বা কৃষ্ণভাবনামৃত সংস্কৃতি হাজার বছরের ধরে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে সময়ের ব্যবধানে বিশ্বের বহু দেশে সম্প্রসারণ ঘটেছে সংগঠনটির।

ইসকনের কর্মসূচি : এর প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মন্দির নির্মাণ, ধর্মীয় উপদেশ দেওয়া, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রচার, ভক্তি কার্যক্রম এবং দাতব্য সংস্থা পরিচালনা। মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনও করে থাকে ইসকন। সংস্কৃতি চর্চার অংশ হিসেবে যোগব্যায়াম এবং জীবনযাত্রার উপর শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম করে থাকে সংগঠনটি। অভাবীদের বিনামূল্যে নিরামিষ খাবারও বিতরণ করে থাকে ইসকন।

যেসব দেশে নিষিদ্ধ ইসকন : সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইসকন রাশিয়া এবং অন্যান্য প্রাক্তন সোভিয়েত রাজ্যে কাজ করতে সক্ষম হয়।

চীনে ইসকনের কার্যক্রমের অনুমতি নেই। ইসকনসহ বিদেশি ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলিকে প্রকাশ্যে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয় না দেশটিতে।

মালয়েশিয়ায়ও নিষিদ্ধ ইসকন। দেশটিতে ইসকনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ আছে। শিয়াশাসিত ইরানে ইসকনের ক্রিয়াকলাপের অনুমতি নেই। এ ছাড়া সৌদি আরব ও আফগানিস্তানে ইসকনের কর্মকাণ্ডের অনুমতি নেই।

ইন্দোনেশিয়ায় আংশিক নিষিদ্ধ ইসকন। কিছু শর্ত মেনে দেশটিতে কার্যক্রম চালাতে পারে সংগঠনটি। এ ছাড়াও তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানে ইসকনের কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি জারি রয়েছে।

যেসব দেশে সক্রিয় ইসকন : ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রাজিল, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই ও ইসরাইলে ব্যাপক সক্রিয় ইসকন। এ ছাড়াও মেক্সিকো, কানাডা, জাপান, থাইল্যান্ড, মরিশাস, ফিজি, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়ায় ইসকনের কর্মসূচি রয়েছে।

বাংলাদেশে ইসকনের অস্তিত্ব : বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ইসকন। দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি মন্দির পরিচালনা করে তারা। সত্তরের দশকের শুরুতে এ দেশে সংঘটির কার্যক্রম শুরু হয়।

রাজধানী ঢাকার স্বামীবাগ মন্দির, যা বর্তমানে ইসকনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এটি সংগঠনটির প্রথম কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ইসকনের বাংলাদেশ শাখা তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যেমন ধর্মপ্রচার, মন্দির পরিচালনা, এবং বার্ষিক রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন। স্বামীবাগ মন্দিরে ভক্তরা নিয়মিত কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করেন এবং ভগবানের সেবা করে থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, দুই বছর পূর্বে স্বামীবাগের মসজিদে তারাবীর নামাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো ইসকন। নামাজের সময় ইসকনের গান-বাজনা বন্ধ রাখতে বলায় তারা পুলিশ ডেকে এনে তারাবীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ হয়।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে আছে ইসকন সদস্যদের নাম। ফলে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশেও ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছেন অনেকে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.