আজ: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং, ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ জানুয়ারী ২০২৫, বুধবার |

kidarkar

স্মার্টকৃষি-নির্ভর মডেল গ্রাম বিনির্মাণে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এসএএফ বাংলাদেশের উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  রংপুর জেলার দুটি পিছিয়ে পড়া গ্রামকে কৃষিভিত্তিক টেকসই গ্রামীণ উন্নয়নের মডেল গ্রামে রূপান্তর করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার ফাউন্ডেশন (এসএএফ)। বাংলাদেশ স্মার্ট ভিশন ২০৪১-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংকটি এ দুই গ্রামের তিন হাজার পাঁচশো জনেরও বেশি কৃষককে সহায়তা করেছে, যা তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য কৃষিভিত্তিক কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।

এ উদ্যোগের আওতায়, দুটি ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ (সিওই) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা প্রশিক্ষণ, উদ্ভাবন ও সামাজিক সেবার মাধ্যমে কৃষি সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি, কৃষকদের বাজার, প্রযুক্তি ও পরামর্শ সেবা দেয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘ফার্মার্স হাব’। এছাড়া, উদ্যোগটির মাধ্যমে হাইব্রিড সৌরচালিত সেচ ব্যবস্থা, কম্বাইন হারভেস্টার, ট্রাক্টর, প্রাকৃতিক গুদাম, কেঁচো সার তৈরি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন প্রযুক্তিসহ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে, ৬২ জন মানুষের কর্মসংস্থান এবং ৩৭ জন গ্রামীণ উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে।

এ প্রকল্পে সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে প্রাথমিকভাবে ৩০০ জন কৃষক কৃষি বীমা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া কৃষক সমাজে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মনোভাবও উন্নত হয়েছে, যা টেকসই গ্রামীণ উন্নয়নের একটি মডেল তৈরি করেছে।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং বিটপী দাশ চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা দেশব্যাপী ৫৭ হাজারের বেশি সুবিধাভোগীর জন্য ১৮টি কার্যকরী কৃষি প্রকল্প বাস্তবায়নের করেছি। এর মাঝে এই মডেল গ্রাম বিনির্মাণের মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নত করার এই উদ্যোগ একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে। গ্রামীণ কৃষির প্রায় সব ধাপে সহায়তা দিয়ে আমরা সামগ্রিক কৃষি উন্নয়ন ও টেকসই প্রবৃদ্ধির একটি অনন্য উদাহরণ তৈরি করছি। এটি তৃণমূল পর্যায়ে পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এ উদ্যোগের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো, এটি একবার শুরু হলে গ্রামবাসী নিজেরাই এটি চালিয়ে যেতে পারে। এসএএফ বাংলাদেশের সঙ্গে এসব গ্রামকে উদ্ভাবন ও সম্ভাবনার মডেলে রূপান্তর করার অভিজ্ঞতা এককথায় দারুণ।‘

এসএএফ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মোঃ ফারহাদ জামিল বলেন, ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সঙ্গে আমাদের যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, গ্রামীণ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। স্মার্ট কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগ ও কৃষি উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে কৃষকরা যাতে সমাজে বিকাশ লাভ করতে এবং পরিবর্তিত কৃষি প্রেক্ষাপটে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন- সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা কৃষক ও তাদের পরিবারের জন্য টেকসই প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার পথ তৈরি করছি।‘

১২০ বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গ্রামীণ সমাজে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্য ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর জন্য সেবা ও উদ্যোগের পরিসর ও মাত্রা বৃদ্ধি করছে এবং স্টেকহোল্ডারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে।

সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার ফাউন্ডেশন (এসএএফ) পূর্বে সিনজেনটা ফাউন্ডেশন ফর সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার (এসএফএসএ) নামে পরিচিত ছিল। এটি একটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলাভজনক উন্নয়ন সংন্থা যা বিগত প্রায় ৪০ বছর ধরে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে কৃষি উন্নয়নে অবদান রেখে আসছে। এসএএফ বাংলাদেশ ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশের কৃষি তথা ক্ষুদ্র কৃষকের উন্নয়নে কাজ করে আসছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.