আজ: শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ইং, ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

জাপানের বিনিয়োগ বাড়াতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক:  সম্প্রতি জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অরগানাইজেশন (জেট্রো) ও জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) সহযোগিতায় এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। ‘ফোরজিং আ শেয়ার্ড ফিউচার’ শীর্ষক এ সভাটি রাজধানীর ওয়েস্টিন ঢাকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা ব্যাংকিং খাতে যৌথ উদ্যোগ/কনসোর্টিয়াম/এ্যাসোসিয়েশন (জেভিসিএ) সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশিকা, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কৌশলগত সহযোগিতা পরিকল্পনা, দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির (ইপিএ) অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীরা যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন-তা নিয়ে আলোচনা করেন।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেছেন, ‘জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৩ বছরের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব রয়েছে। এটি আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। জাপানি বিনিয়োগকারীদের সহযোগিতা করতে পারা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। কারণ, আমরা যৌথভাবে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নে সাহায্য করেছি। এছাড়া এ ধরণের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি, যেখানে নীতিনির্ধারক ও নিয়ন্ত্রকরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও নতুন সম্ভাবনা উন্মোচনের জন্য মত-বিনিময় করতে পারেন।‘

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম নীতিগত সংস্কার এবং ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (জাইকা) প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুছি তমুহিদে বলেন, ‘জাইকার সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলোর মধ্যে শিল্প বৈচিত্র্যকরণ এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং শুল্ক উন্নতির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রয়েছে।‘

জেট্রোর কান্ট্রি রেপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিডার সাম্প্রতিক সার্কুলারটি ন্যাশনাল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যাসোসিয়েশন (এনভিসিএ) গঠনের প্রক্রিয়া, কার্যক্রম এবং নিয়ন্ত্রক প্রতিবেদন সহজ করার জন্য একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। জাপানের বিনিয়োগকারীরা এই নতুন নীতিমালাকে স্বাগত জানালেও কিছু ক্ষেত্রে আরও স্পষ্টতা ও নমনীয়তা প্রয়োজন। এরমধ্যে রয়েছে- সুদবিহীন ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ প্রদান, আউটওয়ার্ড রেমিট্যান্স সম্পাদন সহজ করা, পূর্ববর্তী জেভিচিএর জন্য এই সার্কুলারের প্রয়োগ প্রভৃতি।‘
জেবিসিসিআই-এর সভাপতি তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, ‘ইপিএ এমন একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি যা অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক গভীর করবে। বাংলাদেশ জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেশটি এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে।‘

অনুষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল একটি পারস্পরিক প্রশ্নোত্তর সেশন। সেশনটি পরিচালনা করেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের গ্লোবাল সাবসিডিয়ারিজ বিভাগের প্রধান ফয়সাল ইসলাম। সেশনটিতে বিডা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

সেশন শেষে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের কর্পোরেট কভারেজ বিভাগের প্রধান এনামুল হক অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে ব্যাংকের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যাত্রায় একটি দীর্ঘমেয়াদী অংশীদার হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ ও সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। ব্যাংকটি দেশে জাপানি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতেও সচেষ্ট।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.