আজ: শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ইং, ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ মার্চ ২০২৫, শনিবার |

kidarkar

বাংলাদেশে ওয়ান-ইলেভেনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ভুল ছিল: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের চোখে সার্বভৌম বাংলাদেশকে কখনই দেখা উচিত নয়— এমন মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক জন এফ ড্যানিলোভিচ। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করেন। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন নীতিতে ভুল ছিলো বলেও জানান তিনি।

শনিবার (৮ মার্চ) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক বিশেষ সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

সংলাপের মূল বিষয় ছিলো গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক। এতে জন এফ ড্যানিলোভিচের সাথে আরও যোগ দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম। আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশের ভবিষ্যেতের প্রসঙ্গ। গুজব মোকাবেলায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলে মত দেন তারা।

জন এফ. ড্যানিলোভিচ বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় মার্কিন সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে সেই ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তাদের অর্থায়ন নীতি এবং চলমান সংস্কারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। নাগরিক সমাজকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে, এবং গত ১৭ বছরে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করে সুশাসন সংস্কারের জন্য ব্যবহার করা উচিত।

গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরে ড্যানিলোভিচ বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতি ধারাবাহিকতা রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো শাসক দলের জবাবদিহিতার অভাব। গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে হলে একটি শক্তিশালী সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক অপরিহার্য। স্বৈরাচারী শাসন কখনোই গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়। মিডিয়ার প্রভাব অস্বীকার করা যায় না উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক আলোচনাকে শক্তিশালী করতে নাগরিক সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় তার নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়, এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ফাস্ট নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন এই মার্কিন কূটনীতিক। এসময় তরুণদের উদ্যোগ ও আগামীর সম্ভাবনার প্রশ্নে জেন-জি’দের সুযোগ দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইলাম বাংলাদেশের গণতন্ত্র সম্পর্কে আমেরিকান জনগণকে সচেতন করার জন্য তার সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, আমরা একটি ছোট সংগঠন গঠন করি এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমেরিকান জনগণকে সচেতন করার জন্য কাজ করি। গত পাঁচ বছরে আমরা অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছি এবং এই উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তার সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত, বিশেষ করে গত দশ বছরে আমি বাংলাদেশ সফর করতে পারিনি, ভিসার জন্যে।

অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থী, রাজনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম ও সাবেক মার্কিন কূটনীতি

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.