আজ: সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ইং, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার |

kidarkar

শেখ পরিবার ও ১০ শিল্পগোষ্ঠীর ১৭ হাজার কোটি টাকার শেয়ার জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরত আনার এবং সেই সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে সরকার আন্তঃসংস্থা একটি টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করেছে। টাস্কফোর্স এখন পর্যন্ত জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ শেয়ার আদালতে জব্দ করার তথ্য জানিয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা তাদের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে এবং বিদেশে যাওয়ার জন্য ৮৪ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্সের সপ্তম সভায় এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সভায় দ্রুত মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, অর্থপাচার সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গভর্নর এই বিষয়টি নিয়ে কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য দ্রুত মামলা শেষ করার ওপর জোর দেন এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন।

শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরেও ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর ওপর তদন্ত চলছে, যার মধ্যে রয়েছে এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ ও আরামিট গ্রুপ। এসব শিল্পগ্রুপের প্রধান ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ও এই তদন্তের আওতায় রয়েছে এবং অনেকেই বাংলাদেশে নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।

গত সেপ্টেম্বরে সরকার বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার জন্য নতুন করে আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্স গঠন করেছে, যাতে সভাপতিসহ মোট ৯ সদস্য রাখা হয়েছে। পূর্বে টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সদস্য সংখ্যা ছিল ১৪।

প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সিআইডি, এনবিআর ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অন্যান্য সংস্থার একটি যৌথ তদন্ত দল, যা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বাংলাদেশ ব্যাংকে এই বিষয়ের নথিপত্র প্রস্তুত করার কাজ চলছে। সম্প্রতি গভর্নর আহসান এইচ মনসুর লন্ডন সফর করেন, যেখানে তিনি পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার নিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

গত সফরকালে গভর্নর তাদের জানিয়েছিলেন যে, যদি যথেষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারে, তাহলে ৫ কোটি ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের তিনটি। গভর্নর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশে এসে অর্থ পাচারের মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.