শত বছরের লজ্জার রেকর্ড প্রোটিয়াদের
শেয়ারবাজার ডেস্ক: মোহালি, নাগপুরের মতো বল ঘুরছে না দিলির ফিরোজ শাহ কোটলায়। নেই অসমান বাউন্সও। তবে পিচ বদলালেও ‘মনের ভূতে’ ব্যাটিংটা একই রয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের ৩৩৪ রানের জবাবে গতকাল মাত্র ১২১ রানে গুটিয়ে যায় তারা। দুঃস্বপ্নের সিরিজে প্রোটিয়াদের বাকি ছিল কেবল ফলেঅনে পড়া। রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণিতে (৫ উইকেট) গতকাল হলো সেটাও। তবে নিজেরাই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। মোহালি, নাগপুরের মতো তাই হয়তো তিন দিনে হারের লজ্জা পেতে হচ্ছে না প্রোটিয়াদের।
১৯১৩-১৪ মৌসুমের পর কোনো টেস্ট সিরিজে এবারই প্রথম পাঁচবার ২০০ রানের কমে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জার রেকর্ডটাও ছুঁয়েছে প্রোটিয়ারা। সেবার ইংল্যান্ডে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০ রানের কমে অলআউট হয়েছিল ছয়বার। এবার ভারতে ২০০ রানের নিচে তাদের পাঁচটি ইনিংস-মোহালিতে ১৮৪ ও ১০৯, নাগপুরে ৭৯ ও ১৮৫ আর দিলিতে ১২১।
এই সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে ২৫০ রান করতে পারেনি কোনো দল। সেঞ্চুরিও ছিল অধরা। গতকাল হলো দুটোই। আজিঙ্কা রাহানের সেঞ্চুরিতে ভারতের স্কোর পৌঁছে ৩৩৪ রানে। যে সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোর ২১৫ সেখানে ৩৩৪ হিমালয়সম তো বটেই! আগের দিনের ৮৯ রান থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে রাহানে সময় নেন ৪৫ মিনিট। মরনে মরকেলের বলে বাউন্ডারি দিয়েই সিরিজের প্রথম সেঞ্চুরি উপহার দেন রাহানে। লর্ডস, মেলবোর্ন, কলম্বো, ওয়েলিংটনের মতো ভেন্যুতে সেঞ্চুরি থাকলেও দেশের মাটিতে টেস্টে এটাই তাঁর প্রথম! রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে রাহানে গড়েন ৯৮ রানের জুটি, যা এই সিরিজের সর্বোচ্চ। ২১৫ বলে ১১ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায় রাহানের ১২৭ রানের ইনিংসটি শেষ হয় ইমরান তাহিরের বলে ডি ভিলিয়ার্সের তালুবন্দি হয়ে। রানখরার সিরিজে ফিফটি পেয়েছেন অশ্বিনও। ১৪০ বলে ৬ বাউন্ডারি ১ ছক্কায় ৫৬ করে ফেরেন তিনি। কাইল অ্যাবট ৫ আর ড্যান পিট নিয়েছেন ৪ উইকেট।
জবাবে চা বিরতি পর্যন্ত ১ উইকেটে ৩৮ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডিন এলগার ও তেম্বা ভুমার ৩৬ রানের জুটিটা এই সিরিজে উদ্বোধনী জুটিতে তাদের সেরা। কিন্তু চা বিরতির পর মুখ থুবড়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮৩ রানের ব্যবধানে হারিয়ে বসে শেষ ৯ উইকেট। বল তেমন না ঘোরায় ভারতীয় বোলাররা শুধু সঠিক লাইন-লেংথে বলটা করছিলেন। তাতেই খেই হারিয়ে মাত্র ৪৯.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় হাশিম আমলার দল। মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকায় যাচ্ছেতাই ফুটওয়ার্ক আর বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন অনেকে। ৫ বাউন্ডারিতে ৪২ রানে সাবলীল ছিলেন কেবল ডি ভিলিয়ার্স। জাদেজাকে ডাউন দ্য ট্র্যাকে ছক্কা মারতে গিয়ে লংঅফে ইশান্ত শর্মার অসাধারণ ক্যাচে ফেরেন তিনি। তাতে চতুর্থবারের মতো টেস্টে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান জাদেজা। ক্রিকইনফো
ভারত : ১১৭.৫ ওভারে ৩৩৪ (রাহানে ১২৭, অশ্বিন ৫৬, কোহলি ৪৪; অ্যাবট ৫/৪০, পিট ৪/১১৭)। দক্ষিণ আফ্রিকা : ৪৯.৩ ওভারে ১২১ (ডি ভিলিয়ার্স ৪২; জাদেজা ৫/৩০, অশ্বিন ২/২৬)।