মিউচ্যুয়াল ফান্ড ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করবে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট : পুঁজিবাজারের চলমান মন্দাবস্থায় একমাত্র মিউচ্যুয়াল ফান্ডই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে পারে। বিশেষ করে বে-মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা অনুসারে বিনিয়োগকারীদের কাছে সম্পদ ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছ জবাবদীহীতা এবং বিনিয়োগের নিশ্চয়তা রয়েছে। তাই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের লোকসান এবং ঝুঁকি ঠেকাতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড কার্যকর ভূমিকা পালনে সক্ষম।
আজ মঙ্গলবার রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উদ্বোধনী সংবাদ সম্মেলনে ফান্ডটির অ্যাসেট ম্যানেজার প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা মঈন আল কাশেম এসব কথা বলেন। এছাড়া ভবিষ্যতে ফান্ডটি ভাল ব্যবসা করে বিনিয়োগকারীদের ভাল ডিভিডেন্ড দিতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে।
ফান্ডটির উদ্ধোধন ঘোষণা করে তিনি বলেন, রুপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড জুন ক্লোজিং ফান্ড। আর আগামি জুন মাস শেষে ফান্ডটি ভালো লভ্যাংশ প্রদান করা নিয়ে তিনি আশাবাদি। আস্থার সাথে বিনিয়োগকারীরা এই ফান্ডটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন বলে জানান। আর তারা যে দক্ষ ফান্ড ম্যানেজার তার প্রমাণ আগে রেখেছেন বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাজারের টানা মন্দাভাব সত্ত্বেও তাদের প্রথম ফান্ড প্রাইম ফাইন্যান্সিয়াল ফার্স্ট ইউনিট ফান্ড এরইমধ্যে ভাল ব্যবসা করছে। ফান্ডটি ভয়াবহ ধ্বসের বছর ২০১০ সালে আনা হলেও সর্বশেষ ২০১৪ সালের জন্য ১৪ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে।
তিনি আরো বলেন, রুপালি লাইফ ফার্স্ট ইউনিট ফান্ড প্রথমে মেয়াদি ফান্ড হিসেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু বাজারে বিদ্যমান মেয়াদি ফান্ডগুলোর দুরাবস্থার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এসব ফান্ড থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া মেয়াদি ফান্ডগুলোর ব্যবসা ভাল যাচ্ছে না। কারণ তাদের প্রতিবন্ধকতা অনেক। বিশেষ করে ফান্ডগুলোর এনএভি এবং ইউনিট দরের মধ্যে বিস্তর ফারাক সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় এসব মেয়াদি ফান্ডে বিনিয়োগ করা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য হুমকির স্বরুপ। সেই তুলনায় বে-মেয়াদি ফান্ডের ব্যবসায়িক অবস্থা অনেক ভাল। তারা ফান্ডের অর্থ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। পাশাপাশি বে-মেয়াদি ফান্ডের আকার উন্মুক্ত। তারা যে কোন সময় ফান্ডের আকার বাড়াতে পারে। ফলে ফান্ডগুলোর ব্যবসায়িক সক্ষমতাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ রিটার্নের ক্ষেত্রে শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনা করবো না। এসব কারণেই আমরা রুপালি লাইফ ফার্স্ট ইউনিট ফান্ডকে মেয়াদি থেকে বে-মেয়াদি ফান্ডে রুপান্তর করা হয়েছে। এতে আমাদের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
জানা যায়, ৫০ কোটি টাকার রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি প্রস্তাবিত মূল্য ১০ টাকা। যার ২০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করেছে উদ্যোক্তা রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স। আর ৩০ কোটি টাকার ফান্ড গঠনের আবেদন চলছে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। যা চলবে ১৮ মার্চ পর্যন্ত। ফান্ডটির ট্রাস্টি হিসাবে কাজ করছে বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং কাস্টডিয়ান হিসেবে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অংশগ্রহণ বিষয়ে মঈন আল কাশেম বলেন, পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দরকার আছে । তবে দেশের পুঁজিবাজারের মোট বাজার মূলধনের মাত্র দুই শতাংশ অবদান মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। যা বাজারকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ফান্ডের আকার আরো বড় হওয়ার দরকার বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে ফান্ড ম্যানেজার সাইদ আদনান হূদা, প্রাইম ফাইন্যান্স কেপিটাল ম্যানেজম্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা ড. মোঃ মোশাররফ হোসেন (এফসিএ) উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ারবাজার/তু/মু