আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০১ মার্চ ২০১৫, রবিবার |

kidarkar

চার ব্যবসায়ী সংগঠনের করা রিটের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রশ্ন

high courtশেয়ারবাজার রিপোর্টঃ এফবিসিসিআইসহ চারটি ব্যবসায়ী সংগঠনের করা এক রিটের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। হরতাল-অবরোধের উপর আইনগত বিধি-নিষেধ আরোপ চেয়ে করা ঐ রিটের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে কিনা তা জানতে চায় আদালত। এর পাশাপাশি কোনো সংগঠন আলাদাভাবে সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে রিট করতে পারে কিনা সে বিষয়েও জানতে চান আদালত।

ব্যবসায়ী সংগঠন গুলোর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এসব প্রশ্ন তোলেন।

প্রাথমিক শুনানি শেষে মামলার কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত মূলতবি করা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন কামরুল হক সিদ্দিকী। শুনানির শুরুতেই আইনজীবীকে আদালত বলেন, কোনো সমিতির মৌলিক অধিকার নেই। তবে তার সদস্যদের আছে। এখানে আবেদনকারীরা হলেন সমিতি। তাদের মৌলিক অধিকার নেই।

আইনজীবীকে প্রশ্ন করে আদালত বলেন, মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে কোনো সমিতি বা সংগঠন রিট করতে পারে কি না, কিংবা মামলা করার অধিকার আছে কি না।

অন্যদিকে কোনো সমিতি স্বতন্ত্রভাবে রিট করতে পারে না, তবে অন্য কারো সাথে যুক্ত হয়ে আসতে পারে এমনটিই বলেন আদালত । আইনজীবী বলেন, সমিতিগুলো সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত। এখানে অনেক সদস্য। সুতরাং রিট তো করতে পারে।

আদালত বলেন, রিটে বলা হয়েছে এটা জনস্বার্থে করা হয়েছে। কিন্তু এটা কোনো দিন জনস্বার্থে হতে পারে না। আপনার সমিতিগুলো কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সুতরাং জনস্বার্থে হতে পারে না।

আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আদালত আরো বলেন, আপনি বলছেন এটা জনস্বার্থে, কিন্তু আপনার পার্টিগুলো অর্থনৈতিকভাবে নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত। সুতরাং জনস্বার্থে রিট করা হয়েছে বলে তো আপনি সব শেষ করে দিলেন।

আদালত বলেন, সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সবকটি অনুচ্ছেদে শুধুমাত্র নাগরিকদের কথা বলা হয়েছে। কোন সমিতির কথা বলা নেই।

আদালত আরো বলেন, আপনাদের ক্ষতি হচ্ছে, শুধুমাত্র ব্যালেন্সশীট দিয়ে তো আর জনস্বার্থে রিট হবে না। সুতরাং আমরা দু:খিত। এখন আপনি কি আদেশ নিবেন, নাকি উত্থাপিত হয়নি মর্মে আরো ভাল করে প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। আদালত আরো বলেন, ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক স্বার্থ আর জনস্বার্থ কোনো দিন এক হবে না। এরপর আদালত এ রিটের উপর শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।

ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিটিএমইএ এবং বিকেএমইএ হরতাল অবরোধের উপর বিধি নিষেধ আরোপ এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে রবিবার সকালে রিট দায়ের করেন।

রিটের বিষয়ে ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মঈনুল ইসলাম বলেন, হরতাল গণতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু অবরোধকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে।

একই সঙ্গে আরো বেশ কয়েকটি রুল চাওয়া হয়েছে- ‘হরতালের উপর আইনগত বিধি-নিষেধ আরোপ করার ক্ষেত্রে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না’। এছাড়া আগাম নোটিশ না দিয়ে হরতাল আহ্বান করাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। ‘ক্রেডিট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর(সিআইবি) তালিকা স্থগিত করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না’।

‘হরতাল-অবরোধে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে সরকারের ফান্ড থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না’। ‘ব্যাংক সুদ মওকুফ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ১২ বছরের জন্য সকল ঋণকে পুণ:তফসিল করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না’ মর্মে রিটে রুল চাওয়া হয়েছে।

রিটে সরকার, স্বরাস্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যংকের গভর্নর এবং সকল রাজনৈতিক দলকে বিবাদী করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.