শর্ত সাপেক্ষে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট প্রথা মেনে নিচ্ছে বিসিবি
শেয়ারবাজার ডেস্ক: টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ যখন তলানিতে, পয়েন্ট মাত্র ১৯, তখন আইসিসি’র টেস্ট রেলিগেশন আইডিয়া মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ( বিসিবি)। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে ১০ থেকে ৯ এ ওঠার সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে এখন র্যাঙ্কিংয়ে ৮ নম্বরে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলে আইসিসি’র চোখ রাঙানির জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। আর মাত্র ৮ পয়েন্ট বাড়িয়ে নিতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে সেরা ৮ এ উঠে আসবে তারা।
গত ২ বছরের পারফরমেন্সে টেস্টে যখন লক্ষণীয় উন্নতি হয়েছে, হোমে ১২ টেস্টে ৩ জয় ছাড়াও ড্র’ করেছে ৭টিতে, তখনই বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হচ্ছে মুশফিকুরদের। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে জিম্বাবোয়েকে টপকে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছুঁয়ে ফেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, তখন ২ বছর আগের আইডিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়ে নুতন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে আইসিসি।
টেস্ট খেলিয়ে দেশের সংখ্যা বাড়াতে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট প্রবর্তন করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবোয়ে এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের ২ ফাইনালিস্টের সঙ্গে বাংলাদেশকে টেস্টের দ্বিতীয় স্তরে নামিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে আইসিসি। শীর্ষ ৭ র্যাঙ্কিংধারীদের নিয়ে প্রথম স্তর এবং পরের ৩ র্যাঙ্কিংধারীর সঙ্গে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের ২ ফাইনালিস্টকে নিয়ে ২০১৯ সাল থেকে দ্বিতীয় স্তরের টেস্ট ফর্মূলা প্রবর্তনে আইসিসি অনুমোদন দিলে বড় দলগুলোর সঙ্গে টেস্ট খেলার সুযোগ হারাবে বাংলাদেশ।
তবে অধিকাংশ পূর্ণ সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে থাকায় এ মাসের শেষ সপ্তাহে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে আইসিসি’র বার্ষিক সাধারণ সভায় দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট প্রস্তাব অনুমোদিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন বিসিবি’র সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেন, “সর্বশেষ সভায় দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্টের প্রেজেন্টেশন করেছে আইসিসি। আইসিসি’র ক্রিকেট কমিটিও সম্প্রতি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছে। আগে আইসিসি কোনও প্রস্তাব করলে বিরোধিতা করত চার-পাঁচটি দেশ। কিন্তু দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট ফর্মূলা নিয়ে বিরোধিতা দেখছি না। আমরা একা বিরোধিতা করে কিছুই করতে পারব না।”
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টেস্ট দেখতে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট প্রবর্তনের যে যুক্তি দেখিয়েছেন আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন, সেই চ্যালেঞ্জ জিতে বাংলাদেশ প্রথম স্তরে উঠবে বলে বিশ্বাস বিসিবি’র সিইও-র। তিনি বলেন, “আমাদের জন্য এটা এক ধরনের সুযোগও। কারণ,ওয়েস্ট ইন্ডিজ,জিম্বাবোয়ে এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের দুই ফাইনালিস্টের সঙ্গে খেলে আমরা র্যাঙ্কিং বাড়িয়ে নিয়ে ৭ নম্বরে উঠে প্রথম স্তরে ওঠার সুযোগ পাচ্ছি।
যেহেতু এখন আমাদের সঙ্গে বড় দলগুলো খেলতে তেমন আগ্রহী নয়, তাই দ্বিতীয় স্তরে খেলে প্রমোশন পেয়ে প্রথম স্তরে উঠলে শর্ত সাপেক্ষে টেস্টের দ্বিতীয় স্তরে খেলতে রাজি বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের শর্ত দু’টি। প্রথমটি হল সদস্যপদের ক্ষেত্রে আমাদের স্ট্যাটাস এখন যা আছে, তা থাকতে হবে। দ্বিতীয়টি হল রাজস্ব। নূন্যতম গ্যারান্টি মানি কত পাব,তা নিশ্চিত করে বলতে হবে আইসিসিকে।”
২০১৪ সালে আইসিসি’র বার্ষিক সভায় ২০২০ সাল পর্যন্ত এফটিপির আওতায় দ্বি-পাক্ষিক সফরসূচি চূড়ান্ত হলেও ধাক্কা আসছে চলমান এফটিপিতে। এ মাসের শেষ দিকে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় আইসিসি’র বার্ষিক সাধারণ সভায় দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট ফর্মুলা অনুমোদিত হলে প্রথম স্তরের দেশ পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড,শ্রীলঙ্কা এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত ৯টি টেস্ট খেলা থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল গাজি টিভি’র সঙ্গে ৬ বছরের চুক্তিতে ২০ মিলিয়ন ২৫ হাজার মার্কিন ডলারে ( বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৬০ কোটি ২০ লাখ টাকা) বিক্রিত মিডিয়া এন্ড মার্কেটিং রাইটস থেকেও আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পথে বাধা আসবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ