আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, সোমবার |

kidarkar

১১৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে মার্চেন্ট ব্যাংক

merchant-bankশেয়ারবাজার রিপোর্ট: ৫৬টি মার্চেন্ট ব্যাংক মিলে জুলাই মাসে প্রায় ১১৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বমোট শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ ছিল মাত্র ২২৮ কোটি ২০ লাখ টাকার। এ সময়ে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের মোট লেনদেনে মার্চেন্ট ব্যাংকের অংশ মাত্র ২.১৫ শতাংশ।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই ও সিএসই) মোট ১০ হাজার ১৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ৫৬ মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে মাত্র ১১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনা হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের মাত্র ১ শতাংশ। আবার এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গত জুলাই মাসে বিক্রি করা হয় ১১১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার। অর্থাৎ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর নিট বিনিয়োগ ছিল মাত্র ৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এদিকে ১৬টি মার্চেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান থেকে এ সময়ে কোনো শেয়ারই কেনা হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, গত আগস্টের লেনদেনের সার্বিক চিত্র এখনও পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসের মতো গত মাসেও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর নিজস্ব পোর্টফোলিও থেকে শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ আড়াই থেকে তিন শতাংশে সীমাবদ্ধ থেকেছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) একাধিক নেতা এ প্রসঙ্গে শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, তারল্য সংকটের কারণে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে পারছে না। এ কারণে বাজারের গতি সঞ্চারেও ভূমিকা রাখতে পারছে না।

জানা যায়, জুলাই মাসে সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস থেকে প্রায় ১৬ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনা হয়। অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ১৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছে। ট্রাস্ট ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট প্রায় ১৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। আর এ তিনটি প্রতিষ্ঠান শেয়ার কেনার দিকে শীর্ষে রয়েছে।

তবে প্রাপ্ত শেয়ার কেনায় শীর্ষ মার্চেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই সর্বাধিক পরিমাণ শেয়ার বিক্রি হয়। ফলে জুলাই মাসে বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংকের নিট বিনিয়োগ কমেছে।

অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ১৬ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মধ্যে শেয়ার বিক্রিতে শীর্ষে রয়েছে।

জুলাই মাসে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, এ সময়ে নিট বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি ছিল আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের। মার্চেন্ট ব্যাংকটি ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার নিজস্ব পোর্টফোলিও বিনিয়োগের বিপরীতে পোর্টফোলিও থেকে শেয়ার বিক্রি করেছে মাত্র ১০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ে মার্চেন্ট ব্যাংকটির নিট পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বেড়েছে ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার।

উল্লেখ্য, গত জুলাই শেষে কার্যক্রমরত ৫৬ মার্চেন্ট ব্যাংকের বর্তমান মূলধন প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজস্ব পোর্টফোলিও বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। আর গ্রাহকদের প্রদত্ত মার্জিন ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা, যা গত ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা কম।

জানতে চাইলে বিএমবিএ’র মহাসচিব খায়রুল বাশার শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, মূলধনের তুলনায় তাদের নিজস্ব পোর্টফোলিও বিনিয়োগ কম হওয়ার কারণ নগদ অর্থের সংকট। আবার মার্জিন ঋণের সিংহভাগ আদায় হচ্ছে না। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো নিজস্ব পোর্টফোলিও বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারছে না। নতুন করে তহবিলও জোগার করতে পারছে না।

সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, সাউথইস্ট ব্যাংক শেয়ারবাজার এক্সপোজার সমন্বয়ের অংশ হিসেবে ১০ কোটি টাকার বিনিয়োগ মার্চেন্ট ব্যাংকের মূলধন হিসেবে হস্তান্তর করেছে। এ হস্তান্তরকে ক্রয় হিসাবে দেখানোয় শেয়ার ক্রয় বেশি দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোর মার্কেট এক্সপোজার আইনি সীমার নিচে নামিয়ে আনার কারণে কয়েকটি ব্যাংকের সম্মিলিতভাবে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য নগদ অর্থের নতুন কোনো তহবিল আসেনি। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব বিনিয়োগ বাড়ানোর মতো অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি।

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.