মুনাফায় থেকেও বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করছে ৫ কোম্পানি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: নিয়মিত মুনাফায় থেকেও বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জেড ক্যাটাগরির ৫ কোম্পানি। বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে ৪০ কোম্পানি অবস্থান করছে। এর মধ্যে ৩৫ কোম্পানির অবস্থা যেনতেন হলেও ৫ কোম্পানি রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। এসব কোম্পানি নিয়মিত মুনাফায় থাকলেও ডিভিডেন্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, মুনাফায় থাকা জেড ক্যাটাগরির ৫ কোম্পানি হলো- বিডি অটোকারস, বিকন ফার্মা, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ম্যাকসন্স স্পিনিং এবং মাইডাস ফাইন্যান্স লিমিটেড।
জানা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয় না, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করে না এবং উৎপাদন বন্ধ মূলত সেই কোম্পানিগুলোই ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে। নিয়মিত ডিভিডেন্ড না দেওয়া এবং কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে উৎপাদনে না থাকলেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগকারী রয়েছেন ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে। প্রায়ই সময়ই ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কোনো দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। যে কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোই সব সময় আলোচনার শীর্ষে থাকে।
বিডি অটোকারস: কোম্পানিটি সর্বশেষে তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই’১৫-মার্চ’১৬) প্রকাশ করেছে। আলোচিত অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.২৫ টাকা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ০.১৪ টাকা। এদিকে নিয়মিত মুনাফায় থাকলেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন ডিভিডেন্ডে ঘোষণা করছে না। ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির মুনাফা হয়েছে ১২ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছিল ০.৩৫ টাকা। যা আগের বছর ২০১৪ অর্থবছরে মুনাফা হয়েছিল ২ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছে ০.০৬ টাকা। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১২ সালে বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছেলো।
বিকন ফার্মা: কোম্পানিটি সবশেষে তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই’১৫-মার্চ’১৬) প্রকাশ করেছে। আলোচিত অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.১৫ টাকা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ০.০৬ টাকা। এদিকে নিয়মিত মুনাফায় থাকলেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন ডিভিডেন্ডে ঘোষণা করছে না। ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছিল ০.১৭ টাকা। যা আগের বছর ২০১৪ সমাপ্ত অর্থবছরে ছিল ২ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১১ সালে বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছেলো।
ফার্স্ট ফাইন্যান্স: কোম্পানিটি সবশেষে দ্বিতীয় প্রান্তিক (জানু’১৬-জুন’১৬) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৫৫ টাকা (নেগেটিভ), যা আগের বছর একই সময় ছিল ০.৪৭ টাকা। তবে কোম্পানিটি নিয়মিত মুনাফায় থাকলেও ২০১৫ সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন ডিভিডেন্ড ঘোষণা দেয়নি। ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ৯৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছিল ০.০৮ টাকা। যা আগের বছর ২০১৪ সমাপ্ত অর্থবছরে ছিল ৭ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অবশ্য সে সময় বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা কেরছিলো কোম্পানিটি।
ম্যাকসন্স স্পিনিং: কোম্পানিটি সবশেষে দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর’১৫-মার্চ’১৬) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.২০ টাকা, যা আগের বছর ছিল ০.১৭ টাকা। তবে কোম্পানিটি নিয়মিত মুনাফায় থাকলেও ২০১৫ সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন ডিভিডেন্ড ঘোষণা দেয়নি। ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ৬ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছিল ০.২৮ টাকা। যা আগরে বছর ২০১৪ সমাপ্ত অর্থবছরে ১৫ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং ইপিএস ছিল ০.৭৩ টাকা। অবশ্য সে সময় বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছিলো কোম্পানিটি।
মাইডাস ফাইন্যান্স: কোম্পানিটি সর্বশেষে তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই’১৫-মার্চ’১৬) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৬৪ টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ০.৯৭ টাকা (নেগেটিভ)। কোম্পানিটি ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের মুনাফায় থাকলেও বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন ডিভিডেন্ডে ঘোষণা করেনি। ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরে আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ৪ কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছিল ০.৪১ টাকা। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১১ সালে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছিলো।
শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর