রহস্যে ঘেরা রহিমা ফুড: পরিচালকদের সব শেয়ার সিটি’র কাছে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রহিমা ফুডের পরিচালকদের সব শেয়ার সিটি সুগার ইন্ডাষ্ট্রিজের কাছে ট্রান্সফার করা হয়েছে। গতকাল অনুষ্ঠিত এ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোম্পানির ৮ পরিচালকের হাতে থাকা ১ কোটি ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭০টি শেয়ার সিটি’র কাছে ট্রান্সফার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ট্রান্সফারের কথা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জানানো হলেও ভেতরে রয়েছে গোপন রহস্য।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বিপুল পরিমাণ অর্থে নিজেদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানির চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও দুই পুত্র বিদেশে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে বাকি পরিচালকরা দেশে অবস্থান করলেও ভালো মুনাফা পেয়ে নিজেদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। নিজেদের পকেটে লাভের পুরোটা নিলেও তালিকাভুক্ত এ কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘জেড’ ক্যাটাগরি ও ‘নো’ ডিভিডেন্ড ছাড়া কিছুই রাখেনি। তাই যেখানে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ জড়িত সেখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, কোম্পানির স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার চেয়ারম্যানের স্ত্রী রাফিয়া চৌধুরী তার হাতে থাকা ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৩৮টি শেয়ার, চেয়ারম্যান পুত্র রামি রউফ চৌধুরী তার হাতে থাকা ৪০ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৬টি শেয়ার, চেয়ারম্যানের আরেক পুত্র রাবি রউফ চৌধুরীর হাতে থাকা ৪০ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৬টি শেয়ার সিটি সুগারের কাছে ট্রান্সফার করেছে। এছাড়া কোম্পানির অন্যান্য পরিচালক মোহাম্মদ সোয়েব ১ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার, জাবেদ আলম ২ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ শেয়ার, নাজমুন নাহার ১ লাখ শেয়ার, নুরুন নাহার ১ লাখ ৫৭০টি শেয়ার এবং মেহেরুন নাহার ১ লাখ শেয়ার ট্রান্সফার করেছে।
এ ব্যাপারে কোম্পানি সচিব জাকির হোসেন শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, আসলে কোম্পানির চেয়ারম্যানের পরিবার দেশে খুব কম থাকেন। তারা কোম্পানি পরিচালনার ক্ষেত্রে ঠিকমতো স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেন না। তাই তাদের শেয়ার সিটি সুগার ইন্ডাষ্ট্রিজের কাছে ট্রান্সফার করেছে। অন্যান্য পরিচালকরাও বোর্ড মিটিং, বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) উপস্থিত হওয়া ছাড়া আর কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করেন না। তাই তারা সম্মিলিতভাবেই তাদের হাতে থাকা শেয়ার সিটির কাছে ট্রান্সফার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে শেয়ার বিক্রি না দেখিয়ে ট্রান্সফার দেখানো হয়েছে; কতো টাকায় এই চুক্তি করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন কোনো উত্তর দেননি। ফলে পুরো বিষয়টি ঘোলাটে রয়ে গেছে। যা নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবে এমনটাই আশা করছেন ভুক্তভোগিরা।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা