৫ বছর পর বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে ডিএসই’র মামলা খারিজ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে ৫ বছর আগে ডিএসই’র করা নাশকতা মূলক মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। ২০১২ সালের ১৮ জানুয়ারির ৫২ নম্বর ওই মামলায় খালাস পেয়েছে ৬ জন বিনিয়োগকারী। আজ ৮ জানুয়ারি সিএমএম কোর্টের ১৫ নং আদালতের বিচারপতি ওয়ায়েস করনী খান চৌধুরী মামলাটি খারিজ করে দেন।
জানা গেছে, দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভবনে আগুল লাগানোর উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট লাইনে অগ্নি সংযোজন করে এই মামলার আসামীরা। এমন অভিযোগেই ৬ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে মামলা করে ডিএসই। আর আসামিরা বলছে- ইন্টারনেটের তারে আগুন লেগেছে সত্য, কিন্তু তা কে বা কারা লাগিয়েছে তারা জানে না।
মামলায় অভিযুক্ত এবং খালাস প্রাপ্তরা হলেন: মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী, কাজী আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল হক হারুন, সেলিম চৌধুরী, আতাউল্লাহ নাঈম এবং সেলিমুল হক।
উল্লেখ্য, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ধস নামার পর বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে পড়েন। বিক্ষোভ,আন্দোলন,অনশনের মধ্যে পুঁজি হারানোর প্রতিক্রিয়া জানায় বিনিয়োগকারীরা। অনেক বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। জানা যায়,২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে মূলত পুঁজিবাজারে ধসের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র ৮ কার্যদিবসের ব্যবধানে ডিএসইর সাধারণ সূচক ৮ হাজার ৯০০ পয়েন্ট থেকে নেমে ৭ হাজার ৬০০ পয়েন্টে অবস্থান করে। অর্থাৎ মাত্র কয়েক কার্যদিবসের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ পয়েন্ট সূচকের পতন হয়। তারপর ইতিহাসের কলঙ্কের অধ্যায় রচিত হয় ১০ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে। এদিন পুঁজিবাজারে সাধারণ সূচক ৬৩৫ পয়েন্ট কমে যায়। এদিন শেয়ারবাজারে ধস নামলে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন,বিক্ষোভ করে। আইসিবি এবং আল-আরাফাহ সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী (বিও এফ-১৪৪) নাজিবুল হাসান রনি,ঢাকার গোপীবাগের কাজী লিয়াকত আলী যুবরাজ, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের আগ্রাবাদ শাখা চট্টগ্রাম এর বিনিয়োগকারী ( বিও নং-১২০১৮৪০০৯৯১৫০১৮) দিলদার আহমেদ পুঁজি হারিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। অনেক বিনিয়োগকারী পুঁজি হারানোর শোকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। অথচ সেই পুঁজি হারানোর ক্ষোভে রাস্তায় নেমে আর্তনাদ করার ফলে ২০১১ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে মতিঝিলের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে থেকে ৮ জন বিনিয়োগকারীকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে সেই সূত্র ধরে অর্থাৎ পুঁজিবাজারে ধসের কারণে রাস্তায় ভাঙচুর,জ্বালাও-পোড়ানোর অভিযোগে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। পাঁচ বছর পর অবশেষে আজ সে মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
এ ব্যাপারে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, যখন আমরা গ্রেফতার হই আমাদের মতিঝিল থানায় নিয়ে অনেক নির্যাতন করা হয়। ১৬ দিন কারাবাস করতে হয়। নিজেদের পুঁজি হারিয়ে রাস্তায় নেমে আর্তনাদ করার ফল হিসেবে গলায় মামলার দড়ি ঝুলেছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলার ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কিন্তু যারা এই পুঁজিবাজারকে লুট করেছে;কারসাজি করে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়েছে তাদের কোনো বিচার আজো হয়নি।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু