গুজব রটনাকারীদের সুখবর, বন্ধ হচ্ছে না ফেসবুক পেজ: এবার ভিন্ন কৌশল খুঁজবে বিএসইসি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: শেয়ারবাজারে গুজব ছড়ানোকারী প্রায় ১০০টি ফেসবুক পেজ বন্ধের জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের নিয়মের মধ্যে এসব পেজ বন্ধ করা যাবে না। তাই এবার বাধ্য হয়ে ভিন্ন কৌশল খুঁজছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি)।
কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিএসইসি’র অভিযোগ, একশ্রেণীর কারসাজি চক্র ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপে গুজব ছড়িয়ে শেয়ার ম্যানিপুলেট করছে। এরকম প্রায় ১০০টি ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপ শনাক্ত করেছে কমিশন। তাই এসব ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপ বন্ধের জন্য ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। কিন্তু দুই থেকে তিন মাস ধরে বিটিআরসি থেকে কোন প্রতিক্রিয়া না থাকায় একই বছরের আগস্ট মাসে পুনরায় চিঠি দেয় বিএসইসি।
এর প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে বিটিআরসি এক চিঠির মাধ্যমে বিএসইসি-কে জানায়, বিএসইসি’র চিঠি অনুযায়ী ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টি রাইটস এবং অন্যান্য কপিরাইট-মতে গুজব ছড়ানোকারী ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপ বন্ধের জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নাকচ করেছে। তাই ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপগুলো বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিএসইসি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, বিটিআরসি’র মাধ্যমে শেয়ার ম্যানিপুলেটের উদ্দেশ্যে গুজব রটানোকারী ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপগুলো বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। কারণ হিসেবে বিটিআরসি জানায়, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এসব কারণে কারো পেজ কিংবা গ্রুপ বন্ধ করতে পারেনা।
কিন্তু এ সমস্যার সমাধান কীভাবে সম্ভব জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে কমিশন কাজ করছে। কীভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে গুজব রটানো বন্ধ করা যায় তার কৌশল খুঁজছে কমিশন। প্রয়োজনে এসব পেজ ও গ্রুপের মালিক-কে খুঁজে বের করবে কমিশন।
উল্লেখ্য, সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১৭ মতে, কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান প্রত্যোক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে শেয়ার ম্যানিপুলেটের জন্য গুজব ছড়াতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে স্টক ব্রোকারদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশন এ বিষয়ে মাঠে নামে। কমিশনের তদন্তে প্রায় ১০০টির মতো ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপের নাম উঠে আসে। যারা প্রতিনিয়ত শেয়ার ম্যানিপুলেটের জন্য গুজব ছড়ায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য, ডিএসই ক্লাব(সদস্য সংখ্যা ৪০ হাজার), ডিএসই ফর রিস্কি গেম(সদস্য সংখ্যা ৩৪ হাজার), ডিএসই কারেন্ট ডাটা অ্যানালাইসিস নিউজ(সদস্য সংখ্যা ২৩ হাজার), ডিএসই ইনভেস্টর ক্লাব(সদস্য সংখ্যা ২২ হাজার) প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে পুঁজিবাজার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে শেয়ার ম্যানিপুলেটের দায়ে মাহবুব সারয়ারকে দুই বছরের জেল দিয়েছে। মাহবুব সারয়ার ২০০৭ সালে প্রায় ১০টি ফেসবুক পেজ এবং ব্লগের মাধ্যমে শেয়ার ম্যানিপুলেট করেছিলেন। এছাড়া ১৭ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে গুজব ছড়িয়ে শেয়ার ম্যানিপুলেট করার কারণে সাপ্তাহিক ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক এনায়েত করিমকেও জেলে পাঠিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ