যে কারণে সিটি ব্যাংকের শেয়ার দর বাড়ছে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিটি ব্যাংকের শেয়ার দর হু হু করে বাড়ছে। কারণ বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কাছে নতুন ইস্যু করা ব্যাংকটির ৫ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক সিটি ব্যাংকের সংঘবিধি সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এতে আইএফস’র কাছে ৫ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তরে আর কোন বাধা রইল না। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদনের চিঠি পেলে শেয়ার হস্তান্তরের কার্যক্রম শুরু হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, আইএফসি’র কাছে নতুন ইস্যু করা প্রায় ৪ কোটি ৬১ লাখ শেয়ার বিক্রি করছে ব্যাংকটি। প্রতি শেয়ারের মূল্য ২৮ টাকা ৩০ পয়সা ধরে মোট মূল্য দাঁড়ায় ১৩০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
বর্তমানে সিটি ব্যাংকের মোট শেয়ারের সংখ্যা প্রায় ৮৭ কোটি ৫৮ লাখ। নতুন করে পাঁচ শতাংশ শেয়ার ইস্যুর পর মোট শেয়ার সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৯২ কোটি ২০ লাখ।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সিটি ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে যাচ্ছে এমন খবর রটেছে। আর জের ধরেই ব্যাংকটির শেয়ার দর ৩২ টাকা থেকে ৯ টাকা ৩০ পয়সা বেড়ে আজ সর্বশেষ ৪১ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত ১৭ মার্চ ব্যাংকটির শেয়ার দর ৩২ টাকা ছিল। আজ ব্যাংকটির সমাপনি দর নির্ধারণ হয়েছে ৪১ টাকা ৪০ পয়সা। এদিকে আজ ব্যাংকটি ডিএসই’তে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করছে। আজ ৬১ কোটি ৬৮ লাখ ১৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএফসির কাছে ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। গত বছরের জুনে ব্যাংকের এ প্রস্তাবে অনুমতি দেয় শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে নতুন শেয়ার ইস্যুর ফলে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোসহ সংঘবিধির বেশ কিছু ধারা-উপধারা সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
জানা গেছে, ব্যাংকের সংঘবিধির মোট ৫২টি ধারা এবং ২নং ধারার ১৩টি উপধারা সংশোধনের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৪০টি ধারা সংশোধনের বিষয়ে পুরোপুরি অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২নং ধারার একটি ছাড়া বাকি সব উপধারা সংশোধনের অনুমোদন করা হয়েছে। তবে ৭টি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করা হয়েছে। আর ৫টি ধারা সংশোধনের ক্ষেত্রে দু’একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
সংঘবিধি সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমতির ফলে এখন ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ১৫শ’ কোটি টাকা। যা এখন এক হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া অনুমোদিত অন্য ধারাগুলোয় এমন বিষয় রয়েছে অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে যা সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর বাতিল হওয়া ধারাগুলোয় এমন কিছু রয়েছে যেখানে নতুন শেয়ার ইস্যু বা বিক্রির ক্ষেত্রে আইএফসিকে বেশি ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের তুলনায় পরিচালনা পর্ষদে আইএফসিকে বেশি ক্ষমতার প্রস্তাবও ছিল বাতিল হওয়া ধারাগুলোতে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ