আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ এপ্রিল ২০১৫, বুধবার |

kidarkar

আইনি ফাঁকে রেজিস্টার্ড শহরের বাহিরে এজিএম

AGMশেয়ারবাজার রিপোর্ট: আইনের ফাঁক গলে শেয়ারহোল্ডারদের বোকা বানিয়ে রেজিস্টার্ড কার্যালয় শহরের বাহিরে অন্য বিভাগে গিয়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করছে তালিকাভুক্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক এবং সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ। শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় আইন করা হলেও আদতে আইনের কোন কার্যকারিতা থাকছে না বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে এজিএম সংশ্লিষ্ট কোম্পানির রেজিস্টার্ড কার্যালয়ের স্থানে কিংবা সংশ্লিষ্ট এলাকায় বা শহরে করতে হবে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বিএসইসি’র অনুমোদনের প্রেক্ষিতে এজিএম সংশ্লিষ্ট শহরের বাহিরে করতে পারবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এবং অযথা হয়রানি বা ভোগান্তি বন্ধে বিএসইসি এমন নির্দেশনা জারি করে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক: ২০১৪ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেয়া ব্যাংকটির এজিএম আগামী ৯ মে চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে অনুষ্ঠিত হয়। অথচ ব্যাংকটির রেজিস্টার্ড কার্যালয় ঢাকার দিলকুশায় অবস্থিত।

এ বিষয়ে ব্যাংকটির কোম্পানি সেক্রেটারি এসএম নজরুল ইসলামের অফিস ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে দেয়া ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে শেয়ার বিভাগের কর্মকর্তা নাজমুল আহসান এ বিষয়ে শেয়ারবাজার নিউজ ডট কমকে বলেন, গত ৮ বছর ধরে আমাদের এজিএম চট্টগ্রামে হয়ে আসছে। এবারও আমরা চট্টগ্রামে এজিএম করছি।

বিএসইসির এজিএম বিষয়ক নির্দেশনার ব্যাপারে তিনি বলেন, নির্দেশনাটি মেনে যথানিয়মে চট্টগ্রামে এজিএম করার অনুমোদন চেয়ে বিএসইসি’র কাছে আবেদন করা হয়েছে। এর জন্য বোর্ড সভার পর এজিএমের স্থান ঘোষণা করা হয়নি। তবে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ এপ্রিল চট্টগ্রামে এজিএম করার জন্য আমরা বিএসইসি’র অনুমোদন পেয়েছি।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে বিশেষ ক্ষেত্রে ঢাকার বাহিরে এজিএম করতে হলে বিএসইসি’র অনুমোদন নিতে হবে। এখানে বিশেষ ক্ষেত্রটি কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বরাবরই চট্টগ্রামে এজিএম করছি। তাই চট্টগ্রামেই এজিএম করা হবে বলে বিএসইসি’র অনুমোদন নেয়া হয়েছে।

ঢাকার বাহিরে এতোদূরে সাধারণ শেয়ারহোল্ডার কিভাবে এজিএমে অংশগ্রহণ করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের নিজ দায়িত্বেই এজিএমে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ জন্য আমাদের ব্যাংকের পক্ষ থেকে যাতায়তের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ: ২০১৩-২০১৪ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়া বিবিধ খাতের কোম্পানিটি আগামী ২১ মে তারিখে এজিএম করবে মুন্সীগঞ্জে তাদের নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে। কিন্তু কোম্পানিটির রেজিস্টার্ড অফিস ঢাকার পান্থপথে অবস্থিত।

কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

তবে কোম্পানি সেক্রেটারি মো: শাহজালাল এ বিষয়ে শেয়ারবাজার নিউজ ডট কমকে বলেন, মুন্সীগঞ্জে আমাদের ফ্যাক্টরিতে এজিএম করার জন্য নিয়ম অনুযায়ী বিএসইসি’র কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছি। তাছাড়া সেখানে এজিএম করার জন্য আমাদের অডিটরিয়াম রয়েছে। সেখানে শেয়ারহোল্ডারদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

কিন্তু সেখানে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কিভাবে যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করা হবে।

বিএসইসি’র মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান দেশের বাহিরে থাকায় এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা জানা যায়নি।

এদিকে বাজার বিশেষজ্ঞ ড. আবু আহমেদের মতে, কোম্পানির সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এজিএমে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অংশগ্রহণ জরুরি। তাই এজিএমে অংশগ্রহণ নিয়ে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ভোগান্তি ও হয়রানি বন্ধে বিএসইসি এমন নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনাটির শেষ অংশে বিশেষ ক্ষেত্রে বিএসইসি’র অনুমোদনের প্রেক্ষিতে অন্য এলাকায় এজিএম করা যাবে বলে একটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে বলতে কি বোঝানো হয়েছে এ বিষয়ে বিএসইসি’র পক্ষ থেকে কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। আর এ সুযোগে কোম্পানিগুলোও বিশেষ ক্ষেত্র শর্তটি ব্যবহার করে অন্য জায়গায় এজিএম করার জন্য বিএসইসি’র কাছ থেকে সহজে অনুমোদন পাচ্ছে। পরিণতিতে নির্দেশনাটির মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।

শেয়ারবাজার/অ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.