কি হচ্ছে সোনারগাঁও টেক্সটাইলে !
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: কোন প্রকার মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কারসাজি করে টানা ৫ কার্যদিবস ধরে দর বাড়ানো হচ্ছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি সোনারগাঁও টেক্সটাইলের। এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩২ শতাংশ। অথচ কিছুদিন অাগেও কাঁচামালের অভাবে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ ছিল।
কিন্তু মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হওয়া সত্ত্বেও এ বিষয়ে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি-সহ দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে জানানো হয়নি।
এই প্রেক্ষিতে আজ কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯.৭৩ শতাংশ বেড়েছে। এর শেয়ার দর ১২.৩০ টাকা থেকে ১২.৪০ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে সর্বশেষ ১২.৪০ টাকায় লেনদেন হয়। আজ এই কোম্পানির ১ লাখ ৪০ হাজার ১৯টি শেয়ার সর্বমোট ৮৮ বার লেনদেন হয়। যার বাজার দর ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
সর্বশেষ প্রান্তিক প্রতিবেদনে (জুলাই ১৪- সেপ্টেম্বর ১৪) লোকসান দেখানো হয়েছে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকা, আর ইপিএসে লোকসান হয়েছে ০.১৮ টাকা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল যথাক্রমে ৩৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ০.১৩ টাকা।
এই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত তিনটি প্রান্তিকে অর্থাৎ মোট ৯মাসে (জানু ১৪- সেপ্টেম্বর ১৪) ট্যাক্স দেয়ার পর নীট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০.৬৩ টাকা। যা আগের বছর একই সময়ে এই লোকসানের হার ছিল ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং শেয়ার প্রতি লোকসান ০.৫২ টাকা।
কোম্পানিটি ২০১৩ সালে লোকসান করার কারনে বিনিয়োগকারীদের কোন প্রকার ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। আর ইপিএসের চিত্র দেখে এবছরও কোন ডিভিডেন্ড দিতে পারবে কিনা তাতে সন্দেহ পোষণ করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে এই শেয়ারের দর বৃদ্ধির চিত্র আরো উদ্বেগজনক।
এদিকে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ক্র্যাব) এর এক রিপোর্টে বলা হয় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির অবস্থান দীর্ঘমেয়াদে ‘সিসি’ যা কোম্পানির মৌলভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল বলে প্রকাশ করে।
সোনারগাঁও টেক্সটাইলের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে কিনা জানতে চাইলে কোম্পানিটির সেক্রেটারী আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের কোন প্রকার মূল্য সংবেদনশীল তথ্য জানা নেই। কোম্পানির লোকসানের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কয়েক মাস যাবৎ হরতাল অবরোধের জন্য আমাদের কাচাঁমাল পরিবহনে সমস্যা হয়েছে। এর প্রভাব পরেছে উৎপাদনে। এই কারনে মাঝে মধ্যে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর ২০১২ সমাপ্ত অর্থবছরে কাঁচামাল আমদানিতে মূল্য প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে সমাধানের জন্য বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আর এর জন্যে কোম্পানিটিকে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৪৩ হাজার ৭৩৮ টাকা সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশনিং রাখতে হয়েছিল। কিন্তু দুই বছর পার হয়ে গেলেও এই বিষয়ের অগ্রগতি সম্পর্কে কোন ঘোষণা কোম্পানির পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানির সেক্রেটারি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু/সা