কেয়া গ্রুপের এমডি গ্রেপ্তার: বিকেলে শুনানী
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কাছ থেকে ১১১ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে কেয়া গ্রুপের মালিক আবদুল খালেক পাঠানকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আর আজ বিকেলে ঢাকার সিএমএম কোর্টে মামলার শুনানী অনুষ্ঠিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, পাঁচবার জাতীয় রপ্তানি পুরস্কার পাওয়া দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী কেয়া গ্রুপের মালিক আবদুল খালেক পাঠানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ওই পরিমাণ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে খালেক পাঠানের বিরুদ্ধে। গতকাল বিকেল চারটার দিকে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কেয়া গ্রুপের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, শিল্পগোষ্ঠীটির আটটি প্রতিষ্ঠানের একটি হলো সুতা তৈরির কারখানা কেয়া ইয়ার্ন মিলস। গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল খালেক পাঠান কেয়া ইয়ার্ন মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে রয়েছেন। রপ্তানিতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেয়া গ্রুপ দুবার স্বর্ণপদক, দুবার রৌপ্য ও একবার ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, আবদুল খালেক পাঠানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ২০১০ থেকে ২০১১ সালের আগস্ট পর্যন্ত কেয়া ইয়ার্ন মিলসের নামে কয়েক দফায় ১১১ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে গতকাল তেজগাঁও থানায় খালেক পাঠানসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন—খালেক পাঠানের মেয়ে খালেদা পারভীন (৩৬), তানসিন কেয়া (৩০), ছেলে মাছুম পাঠান (৩২), কৃষি ব্যাংক কারওয়ান বাজার সাবেক ব্যবস্থাপক ও ডিজিএম জুবায়ের মনজুর (৫৮), একই শাখার সাবেক এজিএম সারোয়ার হোসেন (৫৯), সাবেক এসপিও মো. আবুল হোসেন (৫৯) ও গোলাম রসুল (৬১)।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, কৃষি ব্যাংকের ইস্যু করা ঋণপত্রগুলো (এলসি) পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কারওয়ান বাজারের ওই শাখা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদিত সীমার বাইরে গ্রাহকের অনুকূলে ক্রমাগত ফরেন ডেফার্ড এলসি (বিলম্বে ঋণপত্র) খুলেছে এবং ওই সব এলসির বিপরীতে প্রাপ্ত বিলে স্বীকৃতি দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিলের নথিতে মালামাল ছাড়করণের জন্য কাস্টমসকেও অনাপত্তি দিয়েছে। পরে কেয়া ইয়ার্ন উৎপাদিত পণ্য (সুতা) রপ্তানি-সংক্রান্ত কোনো নথি কৃষি ব্যাংকের ওই শাখায় দাখিল করেনি। তারা নির্ধারিত তারিখে দেনা পরিশোধ করেনি। অনুসন্ধানকালে কৃষি ব্যাংকের এলসি মূলে আমদানি করা কোনো মালামাল (কাঁচা তুলা) পাওয়া যায়নি। ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আমদানি করা মালামাল স্টকলট হওয়ারও কোনো তথ্য নেই। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে কেয়া ইয়ার্ন মিল আমদানি করা মালামাল দিয়ে উৎপাদিত পণ্য কৃষি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখার মাধ্যমে রপ্তানি না করে জালিয়াতি করেছে। তারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আমদানি করা মালামাল বিক্রি করে ঋণের টাকা আত্মসাৎ করেছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা