আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ অগাস্ট ২০১৭, সোমবার |

kidarkar

চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক

f05a86c1df6c4a3d3bc7736f9eeba05f-Razzakশেয়ারবাজার ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসক। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছে ৭৫ বছর।

জানা গেছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) আজ বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে পরিবারের সদস্যরা অভিনেতা রাজ্জাককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তিনি হাসপাতালের চিফ কার্ডিওলজিস্ট ডা. মমিনুজ্জামানের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে হাসপাতালে আনার পর তাঁর স্পন্দন, রক্তচাপ কিছু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা সাগুফা আনোয়ার এনটিভি অনলাইনকে অভিনেতা রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

নায়করাজ রাজ্জাক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার। এ ছাড়া একমাত্র অভিনেতা হিসেবে তিনি স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।নায়করাজের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্জাকের মৃত্যুতে দেশের চলচ্চিত্র জগৎ এক কিংবদন্তিকে হারিয়েছে। স্বাধীনতার পরের যুগে চলচ্চিত্রের প্রসারের ক্ষেত্রে রাজ্জাকের ভূমিকার কথা প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে স্মরণ করেন।রাজ্জাকের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন শেখ হাসিনা।

ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ বিবৃতিতে জানায়, নায়করাজ রাজ্জাক কয়েক বছর ধরে হাসপাতালে চিফ কার্ডিলজিস্ট ডা. মোমেনুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হৃদরোগ ছাড়াও তিনি ক্রনিক পালমোনারি ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ মাত্রায় ডায়াবেটিস রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। এর আগেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রের সহায়তায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন জানান, এ মহানায়কের মৃত্যুতে দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দেশের বাইরে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রাঙ্গনও শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে।চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, আগামী তিনদিন সব ধরনের শুটিং বন্ধ রাখা হবে। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (মঙ্গলবার) এফডিসিতে কালো ব্যাচ ধারণ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। আমরা শিল্প সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী তিনদিন কোনো শুটিং করব না। যেসব চলচ্চিত্রে এখন শুটিং হচ্ছে সেগুলো বন্ধ রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

নাকরাজ রাজ্জাকের মৃত্যুতে আরো শোক প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

অভিনেতা রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের (বর্তমান ভারত) কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বরসতি পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন নায়ক অর্থাৎ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক ‘বিদ্রোহী’তে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নায়করাজের অভিনয় জীবন শুরু। ১৯৬৪ সালে রাজ্জাক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। চলচ্চিত্রকার আবদুল জব্বার খানের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ‘তের নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ ছবিতে ছোট একটি চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর ‘কার বউ’, ডাক বাবুতেও অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবি জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’। সে থেকে তিনি তিন শতাধিক বাংলা ও কয়েকটি উর্দু চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। পরিচালনা করেন ১৬টি চলচ্চিত্র।

শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.