আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩০ অগাস্ট ২০১৭, বুধবার |

kidarkar

ঐতিহাসিক জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ

40_Sakib_Miraj_Ullash_221016শেয়ারবাজার রিপোর্ট:  অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে প্রথমবারেরমত টেস্ট জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে ১১ বছর আগের প্রতিশোধ তুলে নিলো টাইগারবাহিনী। টেস্ট জয়ের সুযোগ ছিল দুইদলেরই। ওয়ার্নার-স্মিথের জুটিতে কিছুটা এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হঠাৎ করেই জ্বলে উঠলেন সাকিব-তাইজুল-মিরাজরা। এ তিনজনের হাত ধরে ১১ বছর আগে ফতুল্লায় হারের প্রতিশোধ নিল বাংলাদেশ। আর মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ পেল অধরা জয়।

গতকাল থেকেই বাংলাদেশের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ওয়ার্নার ও স্মিথ। মাথা ব্যাথাটা আরও বাড়ে চতুর্থ দিন ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি। মাঠ থেকে শুরু করে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যালারিতেও। কিন্তু সকালটা যেন রোমাঞ্চের ডালা সাজিয়ে বসেছে। প্রথম ঘণ্টায় ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভ স্মিথ ৬৫ রান তুলে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকেই দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। কিন্তু শেষ এক ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ার ৫ উইকেট তুলে নিয়ে মিরপুরে জয়টা খুব কাছেই এগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ২৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়া চতুর্থ দিন মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছে ৭ উইকেটে ১৯৯ রান তুলে। জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬৬ রান। তখন আশা হয়ে ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু লাঞ্চের পরপরই ম্যাক্সওয়েলকে সাজঘরে ফিরিয়ে জয়টা নিজের দিকে অনেকটাই এগিয়ে নিলেন টাইগাররা।

সাকিবের সঙ্গে মিলে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের বিপদের কারণ হলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাঁর শিকার পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও অ্যাশটন অ্যাগার। তাইজুলের বলে হ্যান্ডসকম্বের ক্যাচটি স্লিপে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় দারুণভাবে ধরেন সৌম্য। দুই ইনিংস মিলেয়ে বেশ কিছু ক্যাস মিস করলেও, অসাধার একটি ক্যাচ নিয়েছে সৌম্য দুইবারের চেষ্টায়। ওয়েড ফিরেছেন এলবি হয়েই। অ্যাগারকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে ফেরান তাইজুল।

এরপরই আবারও আঘাত হানে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডা সাকিব আল হাসান। অপ্রস্তুত অস্ট্রেলিয়াকে আরও অপ্রস্তুত করতে ওয়েডের উইকেটটি তুলে নেন সাকিব। অজি ব্যাটসম্যানরা দিশেহারা হয়ে পরে। আর আকাশে উড়তে থাকে সাকিব। গ্যালারি জুড়ে তখন ” সাকিব, সাকিব” চিৎকার।

অস্ট্রেলিয়া হয়তো এমন পরিস্থিতিতে আশায় বুক বাধঁছিলেন ম্যাক্সওয়েল-অ্যাগারের একটি ভালো পার্টনারশিপ হবে কিন্তু সাকিব ঝড়ে তখন বিদ্ধ্বস্ত, দুর্বল মনোবলে অজিরা। আর সেই অপ্রস্তুত অ্যাগারকে তুলে নেন তাইজুল। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরেন এই বোলার।

এরপর জয়ের স্বপ্নে বিভোর টাইগরারা লাঞ্চ বিরতির থেকে ফিরলে প্রথম বলেই ম্যাক্সওয়েলকে বোল্ড করেন সাকিব। শেষে কামিন্স-লিওন কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও হার থেকে রক্ষা করতে পারেনি। সাকিব দুই ইনিংস মিলে নেন ১০ উইকেট।

এর আগে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে সাকিব-তামিমের দুই অর্ধশতকে ভর করে ২৬০ রানের ইনিংস সাজায় বাংলাদেশ। কিন্তু টাইগার স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এবং সাকিবের অসাধারণ রেকর্ডের সামনে দাঁড়াতেই যেন পারেনি অজীরা। ২১৭ রানেই অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।

তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ২২১ রানে থামে বাংলাদেশ। তবে এই ইনিংসেও অসাধারণ ব্যাট করেন তামিম ইকবাল। তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক। আর অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৫।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ফিফটি পেয়েই সেটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। ১৩৫ বলে ১১২ রান করে আউট হন অস্ট্রেলীয় ওপেনার। সেঞ্চুরি থেকে ২ রান দূরে থাকতে অবশ্য সাকিবের বলে কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদন হয়েছিল। নাকচ হওয়ার পর রিভিউ নিয়েও ব্যর্থ হন সাকিব-মুশফিকরা। দুর্দান্ত এই ইনিংসটি ওয়ার্নার খেলেছেন ১৫টি চার ও ১টি ছক্কার মারে।

বাংলাদেশের পক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। মিরাজ ২টি ও তাইজুল ৩টি উইকেট নেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.