আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১১ অক্টোবর ২০১৭, বুধবার |

kidarkar

ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালকদের বিরুদ্ধে রিট: হাইকোর্টের শোকজ

Fu-Wang-Foods-Ltd-Biscuit2শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালকদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন মো: জুয়েল সিকদার নামে একজন বিনিয়োগকারী। কোম্পানির পরিচালকদের দুই শতাংশ শেয়ার এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারন না করায় পুরো পরিচালনা পর্ষদ অবৈধ দাবি করে আজ ১১ অক্টোবর রিট আবেদন করা হয়।

রিটের জবাবে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের দ্বারা গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ পুনঃগঠনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

রিটের বিপরীতে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ফু-ওয়াং ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আরিফ আহমেদ চৌধুরী, পরিচালক কামাল ক্রান্তি মন্ডল, বিপ্লব চক্রবর্তী, খাজা তোফাজ্জল হোসেনের মধ্যে যারা শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের কেন পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না। এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই)
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের যাদের হাতে পর্যাপ্ত শেয়ার রয়েছে তাদের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত করা হবে না, তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।

রিটে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে SEC/CMRRCD/2009-193/119/admin/34 dated 22.11.2011- নোটিফিকেশন পরিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২০১১ সালের ২২ নভেম্বরের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে
হবে।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো কোম্পানি এ শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত রাইট ইস্যুসহ বাজার থেকে নতুন করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না। আর কোনো পরিচালক এ শর্ত পূরণ করতে না পারলে তার পদ হারাতে হবে। এ নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরই ৪ কোম্পানির ১৪ জন পরিচালক আদালতে রিট করেন। আর শেষ পর্যন্ত পরিচালকদের রিট খারিজ করে বিএসইসির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন
আদালত। পরে বিএসইসি’র নির্দেশনাকে কোম্পানি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালনা পর্ষদে রয়েছে সংসদ সদস্য এ. এম. নাইমুর রহমান, আরিফ আহমেদ চৌধুরী, কামাল কান্তি মন্ডল, বিপ্লব চক্রবর্তী, খাজা তোফাজ্জল হোসেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার ও সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এ. এম নাইমুর রহমান, যিনি স্বাধীন পরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তার হাতে কোন শেয়ার নেই। এদিকে,
ফু-ওয়াং ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে থাকা আরিফ আহমেদ চৌধুরীর হাতে রয়েছে ৪.৪৯২ শতাংশ শেয়ার, কামাল ক্রান্তি মন্ডলের নিকট রয়েছে ০.০০৫ শতাংশ শেয়ার, বিপ্লব চক্রবর্তীর নিকট রয়েছে ০.০৩৪ শতাংশ শেয়ার, তোফাজ্জল হোসেনের নিকট কোন শেয়ারই নাই। অর্থাৎ সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরী ব্যতিত অন্য সকলেই পরিচালনা পর্ষদে থাকার যোগ্যতা নাই।
জানা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফু-ওয়াং ফুড দেশের খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানিটি ২০০০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের নিকট ৪.৭৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নামমাত্র শেয়ার ধারণ করে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা কারসাজির মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকৃত মুনাফা দেখাচ্ছে না। যার
প্রভাব পড়ছে কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণায়। সম্প্রতি বিনিয়োগকারীদের নিকট থেকে অনুমতি না নিয়েই কোম্পানি বিক্রিরও চেষ্ঠা করেছে পরিচালকরা।

রিটের বিষয়ে আবেদনকারী জুয়েল শিকদার বলেন, ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালনা পর্ষদে যারা দায়িত্ব পালন করছে তারা মাত্র ৪.৬৭ শতাংশের অংশীধার। এ কোম্পানিটির ৯৫.২৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিনিয়োগকারীদের নিকট। কিন্তু কোম্পানির পর্ষদের সদস্যদের অনিয়মের কারণে বিনিয়োগকারীরা বছর শেষে ঠিক মত মুনাফা পাচ্ছে না।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, কোম্পানির পরিচালক যদি ৩ হাজার শেয়ারে মালিক হয়, তবে সে ডিভিডেন্ড চিন্তা না করে কিভাবে টাকা চুরি করা যায় তা নিয়েই চিন্তা করবে। যা নিয়মিত হচ্ছে ফু-ওয়াং ফুডে।
জুয়েল শিকদার বলেন, ফু-ওয়াং ফুডের নাম বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের প্রত্যেকেই জানে। কিন্তু বছর শেষে কোম্পানিটি মাত্র ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা
মুনাফা দেখাচ্ছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হচ্ছে। কারণ, এ কোম্পানিটির বছরে ২০ কোটি টাকার উপর মুনাফা হওয়ার কথা। যা প্রতারণা। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আমি আদালতে আসতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এর আগেও পর্যাপ্ত শেয়ার না থাকায় ১৪ কোম্পানির পরিচালক পদ হারিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এরাও পদ হারাবে। যার সুফল পাবে বিনিয়োগকারীরা।

 

 

111

222

333

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.