বড় আইপিও বসুন্ধরা পেপারের বিডিং কাল থেকে শুরু
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: নতুন ক্যাপিটাল ইস্যু আইনে পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বড় প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) নিয়ে আসছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডে। কাগজ খাতে যাদের একচেটিয়া আধিপত্য।
এর আগে বিএসইসি পুঁজিবাজার থেকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিটিকে ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য বিডিং বা নিলামের অনুমতি দেয়। এ টাকা দিয়ে কারখানার আধুনিকায়ন ও মেশিনারিজ আমদানি করবে কোম্পানিটি।
এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল ১৬ অক্টোবর বিকেল ৫টা থেকে ১৯ অক্টোবর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিডিং শুরু হবে বসুন্ধরা পেপারের। বিডিংয়ে অংশ নেবেন যোগ্য বিনিয়োগকারীরা (ইলিজিবল ইনভেস্টররা)।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিটি ইলেক্ট্রনিক বিডিংয়ের মাধ্যমে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা শেয়ার দর বা কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করবে। কাট-অফ প্রাইসে তথা যে দামে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার শেয়ার বিক্রি শেষ হবে, সেই দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হবে।
জানা গেছে, বসুন্ধরা পেপার আইপিও’র মাধ্যমে মোট ২০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের ফেসভ্যালু ১০ টাকা। এই ২০০ কোটি টাকার মধ্যে ইলিজিবল ইনভেষ্টরদের জন্য ১২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিমাণ অর্থের সর্বোচ্চ ২% পর্যন্ত একজন ইলিজিবল ইনভেষ্টর আবেদন করতে পারবে। তবে তা আড়াই কোটির বেশি হবে না। কোম্পানিটির ১০০টি শেয়ারে একটি লট নির্ধারণ করা হয়েছে। যেসব ইলিজিবল ইনভেষ্টরদের কাছে শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হবে তাদের লকইন পিরিয়ড হচ্ছে প্রসপেক্টাস ইস্যুর পর ২৫ শতাংশ প্রথম ছয় মাস এবং ২৫ শতাংশ পরবর্তী ৯ মাস।
যেসব ইলিজিবল ইনভেষ্টররা বিডিংয়ে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে ৫ হাজার টাকা বিডিং ফি এবং বিডিং এমাউন্টের ২০ শতাংশ ডিপোজিট করতে হবে। যা ১৫ অক্টোবর থেকে সকাল ১০টা থেকে ১৯ অক্টোবর দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে। আগামী ১৯ অক্টোবর বিকাল ৫টার পর বিডিং বন্ধ হয়ে যাবে। বিডিং পিরিয়ডের পর অফার পিরিয়ড শুরু হবে ২২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ২৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। বসুন্ধরা পেপারকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেড। এছাড়া রেজিষ্টার টু দ্য ইস্যু হিসেবে কাজ করছে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা শেষ হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে ফের অনুমতি চাইতে হবে। অনুমতি পেলে শেয়ার আবেদন গ্রহণের সময়সূচি প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিটি ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। সংগ্রহ করা অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে কারখানার আধুনিকায়ন ও মেশিনারি আমদানি করবে কোম্পানিটি। যাতে ব্যয় করা হবে ১২০ কোটি টাকা।
আইপিওতে উত্তোলিত অর্থ থেকে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধে। কারখানার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। ইনস্টলেশন কস্টে ব্যয় হবে ৩ কোটি টাকা। যন্ত্রাংশে খরচ হবে ৩ কোটি টাকা। ভূমি ও ভূমি উন্নয়নে খরচ হবে ৩ কোটি টাকা, আইপিওতে খরচ হবে ৫ কোটি টাকা।
কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী শেযার প্রতি নেট অ্যাসেট ভ্যালু (রিভ্যালূয়েশন রির্জাভসহ) ৩০.৪৯ টাকা ও শেয়ার প্রতি নেট অ্যাসেট ভ্যালু (রিভ্যালূয়েশন রির্জাভ ছাড়া) ১৫.৭৯ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় ১.৪৬ টাকা।
উল্লেখ্য, আইপিও আকারের দিক দিয়ে পুঁজিবাজারের ইতিহাসে বসুন্ধরা পেপার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে এমজেএল বিডি ৫০৮ কোটি টাকা এবং গ্রামীণ ফোন ২০০৯ সালে ৪৮৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ