আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১২ নভেম্বর ২০১৭, রবিবার |

kidarkar

আইপিও শেয়ার লেনদেনে শুরুতেই সার্কিট ব্রেকার আরোপ হচ্ছে

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের শুরু থেকেই সার্কিট ব্রেকার আরোপ করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আইপিওতে আসা কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে এমন পরিকল্পনা করছে কমিশন।

বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, আইপিও-তে আসা কোম্পানির শেয়ার লেনদেন পর্যবেক্ষণ করবে কমিশন। সেগুলোর ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক শেয়ার দর বাড়লে শেয়ারবাজারের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করে দেখবে কমিশন।

স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার দর নির্দিষ্ট দিনে কত শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে, তা একটি পূর্বনির্ধারিত ফর্মুলা রয়েছে। একে সার্কিট ব্রেকার বলা হয়। ওই ফর্মুলা অনুযায়ী আগের দিনের সমাপনী দরের ওপর ভিত্তি করে ১০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরের সীমা আরোপ করা হয়। ওই সীমার বাইরে সংশ্নিষ্ট শেয়ার কেনাবেচা হতে পারে না।

আইপিও প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি করে কোনো কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তি হওয়ার পর লেনদেনের প্রথম দুই দিন শেয়ারদরে কোনো সার্কিট ব্রেকার থাকে না। অর্থাৎ ওই দু’দিন যে কোনো মূল্যে শেয়ারটি কেনাবেচা হতে পারে। এমন সুযোগ রাখার কারণ প্রসঙ্গে সাইফুর রহমান বলেন, আইপিওতে আসা শেয়ারের যৌক্তিক মূল্য (ফেয়ার ভ্যালু) নির্ধারণ করার স্বার্থে সার্কিট ব্রেকার রাখা হয় না। বাজারকেই প্রকৃত দর খুঁজে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহার হচ্ছে।

চলতি বছরের আইপিও প্রক্রিয়ায় ৬টি কোম্পানি ও ২টি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানির শেয়ার ১০০ টাকার ওপরে কেনাবেচা হয়েছে। অথচ মিউচুয়াল ফান্ড দুটি কেনাবেচা হচ্ছে অভিহিত মূল্যে ১০ টাকার নিচে।

আইপিওতে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে নূরানী ডাইং, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও প্যাসিফিক ডেনিম লেনদেনের শুরুতে যে দরে কেনাবেচা হয়েছে, এর তার অনেক কম মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে। এক্‌মি ল্যাবসহ ২/১টি ব্যতিক্রম বাদে গত পাঁচ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির ক্ষেত্রে একই চিত্র দেখা গেছে।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া বিবিএস কেবলসের লেনদেন শুরু হয় গত ৩১ জুলাই। লেনদেনের প্রথম দিনে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বোচ্চ ৯৪ টাকায় কেনাবেচা হয়। পরে নানা গুজব ছড়ানোর কারণে শেয়ারটির দর ১৫৮ টাকা ওঠে। এতে মালিকপক্ষের সংশ্নিষ্টতাসহ সুনির্দিষ্ট কারসাজিরও প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে তদন্তের পর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ কমিশনে প্রক্রিয়াধীন। এরপর গত ৬ নভেম্বর তালিকাভুক্তির পর লেনদেনের প্রথম দিনে ওইমেক্স ইলেক্টোডের শেয়ারদর ওঠে ১২০ টাকা। এটিও আইপিওতে ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। শেয়ারবাজারের স্বার্থান্বেষী একটি চক্র এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে বলে তথ্য রয়েছে।

একই অভিযোগ আছে বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় ৩৫ টাকা দরে শেয়ার বিক্রি হওয়া আমরা নেটওয়ার্কসের শেয়ার নিয়ে। গত ২ অক্টোবর সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরুর দিন সর্বোচ্চ দর ওঠে ১৫০ টাকা।

কমিশন কর্মকর্তারা বলেন, সার্কিট ব্রেকার না থাকার সুযোগ নিয়ে একটি চক্র আইপিও শেয়ারের দর বাড়াচ্ছে। অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী অসচেতনতার কারণে ও অতিরিক্ত মুনাফার লোভে পড়ে উচ্চ মূল্যে শেয়ার কেনাবেচা করছেন। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে শেয়ারদর বাড়াতে মালিকপক্ষের সংশ্নিষ্টতার প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ মিলেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.