আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ মার্চ ২০১৮, বুধবার |

kidarkar

ডিএসই শেয়ার: আদার বেপারি হয়ে জাহাজের খোঁজ নেয়া অর্থহীন

ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার চীন, ভারত কে কিনবে তা নিয়ে মহা হুলুস্থুর হচ্ছে। আমরা বিনিয়োগকারীরাও অনেকে বুঝে না বুঝে অযথা টেনশন করছি। ডিএসই’র শেয়ার যে-ই কিনুন তাতে আমাদের বিনিয়োগকারীদের সরাসরি কোন লাভ-লোকসান নাই। ২২ টাকা, না ১৫ টাকা এই টেনশন রিজভী-লালি সাহেবদের, আমাদের না। ওনারা ডিএসই’র মালিক, ৭ টাকা কম বেশী পেলে উনারা পাবেন, আমরা না। আগের কথা না হয় বাদ দিলাম ২০১০ এর পর থেকে মার্কেটে কেয়ামত চলমান থাকলেও ডিএসই প্রতি বছরই কম বেশী মুনাফা করেছে। ২০১৭ সালেও ১০ টাকার শেয়ারে ০.৬ টাকা লাভ করেছে। এর ভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোন দিন পায় নি আর পাবেও না।

ডিএসই’র শেয়ার যদি আপনি কিনতে পারেন তবেই এই লাভের ভাগ আপনি পাবেন। আশার কথা হল চায়না-ভারতের গেঞ্জাম মিটলে ডিএসই’র শেয়ার পাবলিকের কাছেও বিক্রি হবে আইপিওর মাধ্যমে। কবে, কত টাকায় আইপিও দিবে সে প্রশ্ন না হয় ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাকল।

তো ভারত ৫ বছরের জন্য ও চীন ১০ বছরের জন্য ডিএসই’র শেয়ার কিনতে চাইছে। এই মেয়াদের পর চাইলে তাঁরা অন্য কারো কাছে তাদের শেয়ার বেচে লাভ সহ পুঁজি তুলে নিতে পারবে। ডিএসই’র আয়ের প্রধান মাধ্যম হল ট্রেড কমিশন। আমরা যে ২৫/৩০/৪০/৫০ পয়সা ট্রেড কমিশন দেই তা থেকে ৩-৫ পয়সা ডিএসই পায়। ভারত-চীন যে-ই কিনুন তাকে মুনফা করতে হলে মার্কেট কেপিটালাইজেশন বাড়াতে হবে সাথে ট্রেড ভলিউম। নুন্যতম ৮০০শ কোটি টাকা ট্রেড না হলে ডিএসই’র সেই দিন লোকসান গুনতে হয়।

১৫-২২ টাকা ইনভেস্ট করে চীন-ভারত কেউ ডিএসইতে লস গুনতে আসবে না। ৫/১০ বছরে দুই-তিন গুন মুনাফা নিয়ে তবেই বের হবে। আর শুধু লাভই নয় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-চীন এখন ভূ-রাজনৈতিক ক্ষমতার দখন নিয়ে অদৃশ্য যুদ্ধে লিপ্ত। বাংলাদেশে কন্সটাকশন, পাওয়ার প্লান্ট, ডিপ সি পোর্ট ইত্যাদি বহু কিছু নিয়েই কাড়াকাড়ি চলছে। এখন পর্যন্ত সরকার দুই দেশকেই ভাগ-বাটোয়ারা করে কাজ দিয়ে খুশি রাখার চেষ্টা করছে। ডিএসই নিয়েও হয়ত এমন কোন ভাগ-বাটোয়ারার সমাধান হবে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় বিনিয়োগকারী হিসেবে আমাদের খুশি থাকা উচির। ভারত-চীন যে-ই আসুক তাঁরা নিজের লাভের জন্যই বাজারে নতুন নতুন কোম্পানির আনবে, নতুন প্রডাক্ট আনবে, ট্রেড ভলিউম বাড়াবে, দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারী আনবে। তাঁরা সব সময় চেষ্টায় থাকবে বাজারের তেজী ভাব ফিরিয়ে আনতে, ধরে রাখতে। তাই চীন-ভারত কে পাবে এই টেনশন বাদ দিয়ে নিজের জন্য ভাবুব। সামনের বুল মার্কেট সেটা ২/৪ বছর পর যখন-ই ঘটুক আপনি তা থেকে কতটুকু নিতে পারবেন সেই চিন্তা-ভাবনা করুন।

লেখক: মোহাম্মদ হাসান শাহ‌রিয়ার।

শেয়ারবাজার‌নিউজ/ম.সা

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.