শেয়ারবাজার উন্নয়নে বিএসইসিকে অর্থ মন্ত্রনালয়ের ১৫ নির্দেশ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ব্যাংকের এক্সপোজার সমন্বয়সহ বেশকিছু ইস্যুতে দেশের শেয়ারবাজারে পতনের চক্র শুরু হয়েছে। পতনের এ চক্র থেকে শেয়ারবাজারকে বের করে আনার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) অতি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রনালয়। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি ডি-মিউচ্যুয়ালাইজড এক্সচেঞ্জে পরিচালনা পর্ষদের হস্তক্ষেপের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছে মন্ত্রনালয়।
দীর্ঘমেয়াদী সময়ে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীল করার জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিএসইসি ও বিআইসিএম শাখার উপ-সচিব মতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রনালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রনালয়ের দেওয়া নির্দেশনার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ৯০০ কোটি টাকা বিধিমতে সম্পূর্ণভাবে অবমুক্ত করাসহ বাজার মধ্যস্ততাকারীদের ঋণাত্মক হয়ে যাওয়া ইক্যুইটির বিপরীতে নগদ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের উৎসাহি করা এবং ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রনালয়। এমনকি বিনিয়োগকারীদের বাজারে বিনিয়োগে ফিরিয়ে আনতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ করে বা অন্য কোনো সুবিধা দিয়ে বিনিয়োগে উৎসাহি করতেও নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রনালয়।
অর্থ মন্ত্রনালয়ের দেওয়া এ নির্দেশনায় শেয়ারবাজারে তারল্য যোগান বাড়ানোর পাশাপাশি মৌলভিত্তি সম্পন্ন সিকিউরিটিজ বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রনালয়। এসব নির্দেশনা কার্যকর করা হলে দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে বাজার স্থিতিশীল হবে বলে মনে করছেন সরকারী নীতি-নির্ধারকরা। এর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তাদের আরো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সময়ে দেওয়া দাবীগুলোর মধ্যে থেকে অনেকগুলো এ নির্দেশনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রনালয়ের ১৫ দফা নির্দেশনায় আরো বলা হয় সার্ভেইলেন্স, সিকিউরিটিজ ভ্যালুয়েশন, বিজনেস ভ্যালুয়েশন এবং ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট এনালাইসিসের ওপর বিএসইসি কর্মকর্তাদের আরো উচ্চতর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে হবে; মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ও সার্ভেইলেন্স কার্যক্রম আরো কার্যকর করা; শেয়ারবাজার ও সিকিউরিটিজ আইন সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার কার্যক্রম আয়োজন; বিনিয়োগকারীদের ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি বাড়ানো; মার্জিন ঋণের কারণে যেসব বাজার মধ্যস্ততাকারী অর্থাৎ ইন্টারমিডিয়েটারিজ (মার্চেন্ট ব্যাংক/ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির মত প্রতিষ্ঠানগুলো); বাজারে দক্ষ পোর্টফোলিও ম্যানেজারের সংখ্যা বাড়াতে হবে; অসম তথ্যপ্রবাহ দূর করতে হবে।
এদিকে বাজারের স্বার্থে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি ডি-মিউচ্যুয়ালাইজড এক্সচেঞ্জে পরিচালনা পর্ষদ যেন কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বিএসইসি’কে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ধারনা করা হচ্ছে পরিচালনা পর্ষদের চাপে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারুফ মতিন পদত্যাগ করায় ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশনের প্রয়োগ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।তাই এ বিষয়ে কঠোর হচ্ছে মন্ত্রনালয়।
শেয়ারবাজারনিউজ/আহা/ওহ