আজ: বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ইং, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১১ জুলাই ২০১৭, মঙ্গলবার |

kidarkar

বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী দৈনিক পড়াশুনা: পর্ব-১ (বাংলা)

bcsশেয়ারবাজার ডেস্ক: ৩৮তম বিসিএসের প্রিলি পরীক্ষার আবেদন শুরু হয়েছে। আগামী ১০ আগষ্ট পর্যন্ত আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন। ইতিমধ্যেই বিসিএস প্রত্যাশীরা যার যার মতো প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমের এই বিভাগে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিসিএসের সিলেবাস অনুযায়ী দৈনিক পড়াশুনা। এতো বড় সিলেবাস সম্পূর্ণটাই একবারে তুলে ধরে ধৈর্য্যের বিচ্যুতি ঘটাতে চাই না। তাই শুরুটা বাংলা দিয়েই হোক।

মূলত সিলেবাস অনুযায়ী কৌশলগত ভাবে পড়লেই সফল হওয়া যায় এমনটাই জানিয়েছেন বিসিএস ক্যাডাররা। তাই আজকের পড়াশুনা শুরুর আগে প্রথমেই জেনে নেই বিসিএসের বাংলা সিলেবাস।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য – ৩৫ নম্বর 

এই সেগমেন্টে ৩৫টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বিসিএস এ ভালো ফলাফল করার জন্য বাংলায় ভালো করার গুরুত্ব অপরিসীম।

বাংলার সিলেবাসে দুটি অংশ। সাহিত্য – ২০ নম্বর। ভাষা – ১৫ নম্বর।

বাংলা ভাষার ইতিহাস, বাঙ্গালা ও বাঙ্গালী, বাংলা ভাষা ও লিপি

২) বাংলা ভাষার যুগ বিভাগ

i) প্রাচীন যুগ ও বাংলা সাহিত্যঃ চর্যাপদ

ii) মধ্যযুগ ও বাংলা সাহিত্যঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য, মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলী, মুসলিম সাহিত্য, অনুবাদ সাহিত্য, গীতিকা

iii) আধুনিক যুগ ও বাংলা সাহিত্যঃ গদ্যের কথা, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ এবং আধুনিক যুগের কবি লেখকদের জীবনী।

৩) আধুনিক কবি-লেখকদের জীবনী ও অন্যান্য বিষয়ে পড়তে হবে।

নিচে কবি লেখকদের তালিকা দেওয়া হলঃ

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্রপাধ্যায়, মাইকেল মধূসুদন দত্ত, মীর মশাররফ হোসেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দীনবন্ধু মিত্র, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দিন, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, ফররুখ আহমদ, কায়কোবাদ, শরতচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আবু ইসহাক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, আল মাহমুদ, আল ফজল, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আবুল মনসুর আহমদ, আবুল হাসান, আহসান হাবীব, জহির রায়হান, জীবনান্দ দাশ, প্রমথ চৌধুরী, প্যারীচাঁদ মিত্র, মানিক বন্দোপাধ্যায়, মুনীর চৌধুরী, শওকত ওসমান, সুফিয়া কামাল, সেলিনা হোসেন, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, সৈয়দ মুজতবা আলি, সেলিম আলদিন, শামসুর রহমান, হাসান আজিজুল হক, হাসান হাফিজুর রহমান, নির্মলেন্দু গুণ, দিলারা হাসেম, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন কবির, হুমায়ুন আহমদ, জাহানারা ইমাম, রাবেয়া খাতুন, কবীর চৌধুরী, রাজিয়া খান, গোলাম মোস্তফা, সিকান্দার আবু জাফর, কাজী মোতাহার হোসেন, সুকান্ত ভট্রাচার্য, তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়।

এই সকল কবি-লেখকদের যে বিষয়টি পড়তে হবে তা হলঃ

জন্ম-মৃত্যু সাল, জন্মস্থান, উল্লেখযোগ্য রচনা, সম্পাদিত পত্রিকা, পত্রিকার নাম, ছদ্মনাম, উপাধি, প্রাপ্ত পুরষ্কার।

এছাড়া আরো যা পড়া উচিত, উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্বভিত্তিক রচনা, উপন্যাস, কাব্য, ছড়া।

বাংলা সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য শিশুতোষ গ্রন্থ, ভ্রমণ কাহিনী, প্রহসন, নাটক নাম এবং এগুলোর রচনাকারীদের নাম।

বাংলা সাহিত্যের প্রথম যা তাও পড়তে হবে। যেমন প্রথম নাটক, প্রথম উপন্যাস, প্রথম সার্থক উপন্যাস। এইরূপঃ প্রথম গীতিকাব্য, প্রথম বাংলা অনুবাদ, প্রথম সামাজিক নাটক, বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাময়িকী, প্রথম ট্রাজেডি নাটক, প্রথম একুশের কবিতা, প্রথম নাট্যকার, প্রথম মহিলা কবি, প্রথম সার্থক ঔপন্যাসিক, প্রথম মুক্তিযুদ্বভিত্তিক রচনা, প্রথম রামায়ণ অনুবাদ কারী ইত্যাদি।

ভাষাঃ ১৫ নম্বর

বিষয়সমূহঃ প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, বানান ও বাক্যশুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ, ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস।

ক) প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, বানান ও বাক্যশুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক ও বিপরীত শব্দঃ

‘ভুল-শুদ্ধি’ এবং ‘পরিভাষা’ পূর্বের লিখিত সিলেবাসে ছিল। তাই লিখিত এর যেকোন গাইড দেখতে পারেন। অবশ্য লিখিত পরীক্ষাতে যে সব বাক্যশুদ্ধি অপরিভাষা এসেছিল, সেগুলো আগে দেখুন। সিলেবাসে ‘বানান ও বাক্যশুদ্ধি’, ‘সমার্থক ও বিপরীত শব্দ’এর জন্য এইচ, এস, সি লেভেলের ব্যাকরণ বই টা দেখতে পারেন। সেই সাথে সিলেবাসে উল্লেখ না থাকলেও নবম দশম শ্রেণীর বোর্ডের ব্যাকরণ বইয়ে কয়েকটা অধ্যায় দেখতে পারেন।

ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান, বাক্য (বাক্যের গুণ মানে আকাংক্ষা, আসত্তি, যোগ্যতা), বচনের অধ্যায়ের কিছু নিয়ম আছে।

খ) ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাসঃ

এই টপিকগুলো নবম-দশম শ্রেণীর বোর্ডের ব্যাকরণ বই থেকে পড়া উচিত। কিন্তু সিলেবাস কি এইটুকুতেই যথেষ্ট? একটু ভালো করে লক্ষ্য করুন। সিলেবাসে ‘শব্দ’ উল্লেখ আছে। এর অর্থ কি? শুধু শব্দ অধ্যায় নাকি শব্দতত্ত্ব বুঝিয়েছে! আবার প্রত্যয়, সমাস এগুলো উল্লেখ আছে। এইগুলো দিয়ে কিন্তু শব্দ তৈরি হয়। কিন্তু উপসর্গ, বচন, লিঙ্গ এগুলো উল্লেখ নাই। এইগুলো আবার শব্দতত্ত্বে অধীনে। পূর্বের প্রিলিমিনারী পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে অনুমান করা যায় যে, উপসর্গ, বচন এইগুলো থেকে অনেক প্রশ্নই এসেছে। তাই এখানে কি পড়বেন একটু চিন্তাভাবনার বিষয় আছে! তবে সহজ সিদ্ধান্ত হচ্ছে, সিলেবাসে সরাসরি যে সব অধ্যায় উল্লেখ আছে সেগুলো আগের পড়ুন এবং সেই বিষয়ক অন্য অধ্যায়গুলো পড়ে প্রশ্ন কাভার করুন।

ধ্বনি, বর্ণ, উচ্চারণ স্থান, ধ্বনি পরিবর্তন, শব্দ, শব্দের শ্রেণীবিভাগ (উৎপত্তি, গঠন ও অর্থ অনুসারে), পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস এগুলোর জন্য নবম দশম শ্রেণীর বোর্ড ব্যাকরণ বইটাতে আলাদা আলাদা অধ্যায় আছে। আর এর সাথে সম্পর্কিত অধ্যায়গুলো বাদ দেয়া যাচ্ছে না।

তো শুরু করা যাক আজকের পড়াশুনা? সিলেবাসের শুরু থেকে আসি

বাংলা ভাষা

ইতিহাস

খ্রিস্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়কালে মাগধী প্রাকৃত ও পালির মতো পূর্ব মধ্য ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ থেকে বাংলা ও অন্যান্য পূর্ব ইন্দো-আর্য ভাষাগুলিরউদ্ভব ঘটে। এই অঞ্চলে কথ্য ভাষা প্রথম সহস্রাব্দে মাগধী প্রাকৃত বা অর্ধমাগধী ভাষায় বিবর্তিত হয়। খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর শুরুতে উত্তর ভারতের অন্যান্য প্রাকৃত ভাষার মতোই মাগধী প্রাকৃত থেকে অপভ্রংশ ভাষাগুলির উদ্ভব ঘটে। পূর্বী অপভ্রংশ বা অবহট্‌ঠ নামক পূর্ব উপমহাদেশের স্থানীয় অপভ্রংশ ভাষাগুলি ধীরে ধীরে আঞ্চলিক কথ্য ভাষায় বিবর্তিত হয়, যা মূলতঃ ওড়িয়া ভাষা, বাংলা-অসমীয়া ও বিহারী ভাষাসমূহের জন্ম দেয়। কোনো কোনো ভাষাবিদ ৫০০ খ্রিস্টাব্দে এই তিন ভাষার জন্ম বলে মনে করলেও  এই ভাষাটি তখন পর্যন্ত কোনো সুস্থির রূপ ধারণ করেনি; সে সময় এর বিভিন্ন লিখিত ও ঔপভাষিক রূপ পাশাপাশি বিদ্যমান ছিল। যেমন, ধারণা করা হয়, আনুমানিক ষষ্ঠ শতাব্দীতে মাগধী অপভ্রংশ থেকে অবহট্‌ঠের উদ্ভব ঘটে, যা প্রাক-বাংলা ভাষাগুলির সঙ্গে কিছু সময় ধরে সহাবস্থান করছিল।

চৈতন্য মহাপ্রভুর যুগে ও বাংলার নবজাগরণের সময় বাংলা সাহিত্য সংস্কৃত ভাষা দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিল।

 সংস্কৃত থেকে যে সমস্ত শব্দ বাংলা ভাষায় যোগ করা হয়, তাঁদের উচ্চারণ অন্যান্য বাংলা রীতি মেনে পরিবর্তিত হলেও সংস্কৃত বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়।

ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে নদিয়া অঞ্চলে প্রচলিত পশ্চিম-মধ্য বাংলা কথ্য ভাষার ওপর ভিত্তি করে আধুনিক বাংলা সাহিত্য গড়ে ওঠে। বিভিন্ন আঞ্চলিক কথ্য বাংলা ভাষা ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষার মধে অনেকখানি পার্থক্য রয়েছে।আধুনিক বাংলা শব্দভাণ্ডারে মাগধী প্রাকৃত, পালি, সংস্কৃত, ফার্সি, আরবি ভাষা এবং অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষাসমূহ সহ অন্যান্য ভাষা পরিবারের শব্দ স্থান পেয়েছে।

চর্যাপদের একটি পৃষ্ঠা

বাংলা ভাষার ইতিহাসকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়:

  1. প্রাচীন বাংলা (৯০০/১০০০ – ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ) — চর্যাপদ, ভক্তিমূলক গান এই সময়কার লিখিত নিদর্শন। এই সময় আমিতুমি ইত্যাদি সর্বনাম এবং –ইলা, –ইবা, ইত্যাদি ক্রিয়াবিভক্তির আবির্ভাব ঘটে।
  2. মধ্য বাংলা (১৪০০–১৮০০ খ্রিস্টাব্দ) — এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ লিখিত নিদর্শন চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ইত্যাদি। শব্দের শেষে “অ” ধ্বনির বিলোপ, যৌগিক ক্রিয়ার প্রচলন, ফার্সি ভাষার প্রভাব এই সময়ের সাহিত্যে লক্ষ্য করা যায়। কোনো কোনো ভাষাবিদ এই যুগকে আদি ও অন্ত্য এই দুই ভাগে ভাগ করেন।
  3. আধুনিক বাংলা (১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে-বর্তমান) — এই সময় ক্রিয়া ও সর্বনামের সংক্ষেপণ ঘটে, যেমন তাহার → তারকরিয়াছিল → করেছিল

অষ্টাদশ শতাব্দীর পূর্বে, বাংলা ব্যাকরণ রচনার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৭৩৪ থেকে ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভাওয়াল জমিদারীতে কর্মরত অবস্থায় পর্তুগিজ মিশনারি পাদ্রি ম্যানুয়েল দ্য আসুম্পসাও সর্বপ্রথম ভোকাবোলারিও এম ইডিওমা বেঙ্গালা, এ পোর্তুগুয়েজ ডিভিডিডো এম দুয়াস পার্তেস (পর্তুগিজ ভাষায়: Vocabolario em idioma Bengalla, e Portuguez dividido em duas partes) নামক বাংলা ভাষার অভিধান ও ব্যাকরণ রচনা করেন।  ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হ্যালহেড নামক এক ইংরেজ ব্যাকরণবিদবিদ আ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ (ইংরেজি ভাষায়: A Grammar of the Bengal Language) নামক গ্রন্থে একটি আধুনিক বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন, যেখানে ছাপাখানার বাংলা হরফ প্রথম ব্যবহৃত হয়। বাঙালি সমাজসংস্কারক রাজা রামমোহন রায় ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে গ্র্যামার অফ্ দ্য বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ্ (ইংরেজি ভাষায়: Grammar of the Bengali Language) নামক একটি ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন।

১৯৫১–৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জনগণের প্রবল ভাষা সচেতনতার ফলস্বরূপ বাংলা ভাষা আন্দোলন নামক একটি ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনে পাকিস্তান সরকারের নিকট বাংলা ভাষার সরকারি স্বীকৃতি দাবী কর হয়। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বহু ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মী নিহত হন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন দিবস পালিত হয়। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেরমর্যাদা প্রদান করে।

বাংলাদেশ ছাড়াও ১৯৫০-এর দশকে ভারতের বিহার রাজ্যের মানভূম জেলায় বাংলা ভাষা আন্দোলন ঘটে। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের ভারতের অসম রাজ্যের বরাক উপত্যকায়একইরকম ভাবে বাংলা ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হয়। ১৯ মে, শিলচরে বাংলা ভাষার দাবীতে আন্দোলনরত ১১ জন পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.