শিশু তৃষা ধর্ষণ-হত্যা মামলার দুই আসামিই বেকসুর খালাস, বিচারে অসন্তুষ্ট বাবা
শেয়ারবাজার ডেস্ক: যশোর শহরতলীর খোলাডাঙ্গার চাঞ্চল্যকর শিশু আফরিন তৃষা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে দুই আসামিই বেকসুর খালাস পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা এ রায় দেন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- খোলাডাঙ্গার মৃত আউয়ালের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও কামরুল গাজীর ছেলে মেহেদী ওরফে শক্তি গাজী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি সেতারা খাতুন।
জানা যায়, ২০২০ সালের ৩ মার্চ বিকালে আফরিন তৃষা খেলা করতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হন স্বজনরা। পরদিন সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে গর্ত দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। গর্ত খুঁড়ে তৃষার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহত তিশার পিতা শহরতলীর খোলাডাঙ্গা গ্রামের সালভেশন আর্মিপাড়ার ওমর আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ইজিবাইকচালক তরিকুল ইসলামসহ অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাইফুল ইসলামকে আটক করে। তার দেয়া স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দিতে উঠে আসে হত্যাকারীদের নাম। এরপর পুলিশ সাইফুলের স্বীকারোক্তিতে প্রধান আসামি মাদক ব্যবসায়ী শামীমকে আটক ও পালিয়ে যাওয়ার সময় ক্রসফায়ারে নিহত হয়। পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে অপর আসামি শক্তি গাজী আদালতে আত্মসমর্পণ করে।
এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই দুইজনকে অভিযুক্ত ও নিহত হওয়ায় শামীমের অব্যাহতির আবেদন করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শিহাবুর রহমান।
এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে খালাসপ্রাপ্ত দুইজনকে মুক্তি দেয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ধর্ষণের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় মেহেদী হাসান ও সাইফুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় অভিযুক্ত আসামি মেহেদী হাসান পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত শামীম গত বছরের ৬ মার্চ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার কারণে অভিযোগপত্র থেকে তাঁর অব্যাহতির আবেদন করা হয়। পরে মেহেদী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (বিশেষ পিপি) সেতারা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, রায়ে আটক আসামি মেহেদী হাসান ও সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাঁদের এই মামলা থেকে খালাস দেন। খালাসপ্রাপ্ত মেহেদী হাসান খোলাডাঙ্গা গাজীপাড়ার কামরুজ্জামানের ছেলে ও সাইফুল ইসলাম একই এলাকার আবদুল আওয়ালের ছেলে।
এদিকে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী নিহত তৃষার বাবা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমি অসন্তুষ্ট। উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
শেয়ারবাজার নিউজ/মি