আজ: বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪ইং, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ মে ২০২৪, শনিবার |

kidarkar

১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছরের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অতিমাত্রায় ইনসুলিনের ডোজ প্রয়োগ করে অন্তত ১৭ জন রোগীকে হত্যার দায়ে হেদার প্রেসডি (৪১) নামের এক নার্সকে ৭৬০ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি আদালত। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল— তিন বছরে অঙ্গরাজ্যের ৫টি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।

মামলার বিবরণীতে আরও জানা গেছে, এই তিন বছরে মোট ২২ জন রোগীকে প্রাণঘাতী ইনসুলিনের ইঞ্জেকশন দিয়েছেন তিনি। তাদের সবার বয়স ৪৩ বছর থেকে ১০৪ বছরের মধ্যে। এই ২২ জন রোগীর মধ্যে মাত্র ৫ জনকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য রাতের বেলার শিফটকে বেছে নিতেন হেদার। যে ২২ জনের দেহে তিনি প্রাণঘাতী ইনসুলিনের ইঞ্জেকশন পুশ করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন এমনকি ডায়াবেটিসের রোগীও ছিলেন না।

দেহে অতিমাত্রায় ইনসুলিন প্রবেশ করানো হলে হাইপোগ্লিকেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা শূন্যের কাছাকাছি নেমে যাওয়া) নামের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যায় রোগী শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল বোধ করেন, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায় এবং যদি শিগগিরই চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য বা তরল গ্রহণ না করেন, তাহলে হার্ট অ্যাটাক ঘটার সমূহ আশঙ্কা থাকে।

গত বছর মার্চের দিকে পেনসিলভেনিয়ার এক হাসপাতালে দু’জন রোগীর পর পর মৃত্যুর পর হেদার প্রেসডির ওপর সন্দেহ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। পরে পুলিশকে তারা এ ব্যাপারে অবহিত করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সেই তদন্তের এক পর্যায়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তারপর মে মাসে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার শুরুর প্রথম দিন বাদিপক্ষের আইনজীবী হেদারকে যখন প্রশ্ন করেন, ‘আপনি নিজেকে দোষী দাবি করছেন, না নির্দোষ?’ জবাবে হেদার বলেন, ‘আমি দোষী।’

কেন তিনি নিজেকে দোষী দাবি করছেন— আইনজীবী জানতে চাইলে হিদার বলেন, ‘আমি দোষ করেছি। তাই আমি দোষী।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হেদার তার পরিচিত অধিকাংশ রোগী, সহকর্মী ও অন্যান্য লোকজনকে অপছন্দ করতেন এবং মনে মনে তাদের ক্ষতি করতে চাইতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মায়ের সঙ্গে নিয়মিত টেক্সট মেসেজে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। সেসব মেসেজে এসব ব্যাপারে মায়ের সঙ্গে কথা হতো হেদারের।

বিচার চলাকালে বাদিপক্ষের এক সাক্ষী হিদারের সম্পর্কে বলেছেন, ‘তিনি অসুস্থ নন, উন্মাদও নন; তবে অশুভ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। যে রাতে তিনি আমার বাবাকে খুন করেছেন, তার পরদিন সকালে তার মুখে আমি শয়তানের ছায়া দেখেছি।’

অভিযোগ প্রমাণের পরপরই হেদারের নার্সিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিল। তার যেসব সহকর্মী আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন, তাদের প্রায় সবাই তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন।

তবে চাকরিক্ষেত্রে বেশ নিয়মানুবর্তী ছিলেন তিনি। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পেনসিলভেনিয়ার কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে কাজ করেছেন হেদার।

সূত্র : এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.