আসছে সুখবর: ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার সময়সীমা বাড়াতে তোড়জোড়
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ কমিয়ে আনার যে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে তা বাড়ানোর জন্য তোড়জোড় চলছে। বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারণীমহলগুলোর দাবীর মুখে খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে তৎপর ভূমিকা পালন করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিএসইসি’র সুপারিশ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট কমিয়ে আনার সময়সীমা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই সংশোধনটি অর্থ মন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে। অর্থ মন্ত্রী অনুমোদন দিলেই আইনি ছাড়পত্রের জন্য সংশোধনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আর আইন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ভেটিং সম্পন্ন করে ছাড়পত্র দিলেই বিষয়টি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
জানা যায়, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা হয়েছে যে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ইক্যুইটির ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। ব্যাংকের ইক্যুইটি বলতে আদায়কৃত মূলধন,শেয়ার প্রিমিয়ামে রক্ষিত স্থিতি,সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিকে বুঝানো হয়। গত ৩১ মে পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইক্যুইটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার কোটি টাকা। যার ২৫ শতাংশ হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে না। কিন্তু ইতিমধ্যেই ব্যাংকগুলো প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলো প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বেশি বিনিয়োগ করেছে। তাই এ বিনিয়োগ কমিয়ে আনার জন্য ২০১৬ সালের ২১ জুলাই ডেডলাইন বেঁধে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আগামী ১ বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে বের করে নিতে হবে। এতে বাজারে ব্যাপক সেল প্রেসার তৈরি হবে। আর এই সেল প্রেসারে পুঁজিবাজারে বড় ধরণের ধস নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানান, ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের কারণে পুঁজিবাজারে সেল প্রেশার বেড়েছে। যা বর্তমানে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় বিরুপ প্রভাব ফেলছে। আর এ কারণে নানা উদ্যোগ নিলেও বাজারের পতন ঠেকাতে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট নির্ধারিত হওয়ায় বিএসইসি এ বিষয়ে সরাসরি কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাই পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের সমন্বয় সভায় ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেছে বিএসইসি।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই বিষয়টি অর্থমন্ত্রনালয়কে জানিয়েছে। অর্থমন্ত্রনালয় ব্যাংকগুলোর এক্সপোজারের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ.তু/ও.সি/সা