আজ: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ ডিসেম্বর ২০২২, বুধবার |

kidarkar

পুনর্গঠনের পাঁচ বছরেই সেরাদের তালিকায় এনআরবিসি ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে এনআরবিসি ব্যাংক গ্রাম-বাংলার প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের ভাগ্য উন্নয়নে অর্থায়ন করে যাচ্ছে।এনআরবিসি ব্যাংক সব সুবিধা নিয়ে স্বল্পপরিসারে উপশাখা ব্যাংকিং চালু করেছে। ব্যাংকিংসেবায় মানুষদের কর্মসংস্থানে সহজশর্তে বিতরণ করছে ক্ষুদ্র ঋণ। চেকবই ও এটিএম কার্ড ছাড়াই লেনদেন করতে ‘কিউআর কোড’ চালু করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। লেনদেনের এই সহজ পদ্ধতি ছাড়াও প্লানেট অ্যাপের মাধ্যমে মিলছে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা।

নিত্যনতুন সেবা উদ্ভাবনে এনআরবিসি ব্যাংক পেয়েছে এশিয়ার সেরা ব্যাংকের স্বীকৃতিও। সেরা ডিলার হিসেবে পুরস্কার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনলাইনে এসিএস চালানের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম হওয়ার বিশেষ স্বীকৃতিও পেয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। এনআরবিসি ব্যাংকের এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে গত ৫ বছরে। এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে এসএম পারভেজ তমালের নেতৃত্বে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর। এরপর থেকে সব সূচকেই এগোচ্ছে ব্যাংকটি।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে এনআরবিসি ব্যাংক। শুরুতে ঋণ সংক্রান্ত অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে হোঁচট খায় প্রতিষ্ঠানটি। ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এসএম পারভেজ তমাল। তার নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব পালন শুরু করেন ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে। পর্ষদ পুনর্গঠনের ৫ বছর ইতোমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে। সেই সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে ব্যাংকটি এখন বিভিন্ন সূচকের উন্নয়নে মাইলফলক।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, আমরা একটা প্রেক্ষাপটে এই ব্যাংকের দায়িত্ব গ্রহণ করি। ব্যাংটিকে টেনে তোলা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু আমরা প্রবাসীরা আমাদের বিদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকটিকে পরিচালনা করছি। আমরা চেয়েছি আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে একেবারে নিম্ন পর্যায়ের প্রান্তিক মানুষেরা সেবা পাক। ঘরে বসেই তাদের কর্মসংস্থান হোক, তারাই নতুন উদ্যোগ গড়ে তুলে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করুক। এই লক্ষ্যে এনআরবিসি ব্যাংক চালু করেছে উপশাখা ও বিশেষ ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প। সরকারি সেবা সহজীকরণে বুথ স্থাপন ও নতুন প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। এই সেবা নিয়ে আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। এজন্য এশিয়ার সেরা ব্যাংক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছি। আমরা মানুষের কল্যাণে আরও বহুদূর যেতে চাই।

ব্যাংকটির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৭ সালের পর দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হচ্ছে উপশাখা চালু করা এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদান। এরই মধ্যে ব্যাংকটি সারাদেশে ৬৫০টি উপশাখা করেছে। এখন পর্যন্ত শাখা রয়েছে ৯৪টি। আগামী সপ্তাহে ১০০তম শাখা উদ্বোধন করতে যাচ্ছে ব্যাংকটি। এর বাইরে রয়েছে ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস এবং বিআরটিএ অফিসগুলোতে বুথ। এছাড়া প্রায় সাড়ে ৫৫০ এজেন্ট পয়েন্ট রয়েছে। এসব জায়গায় ৬ হাজার ব্যাংকার কাজ করছেন। প্রান্তিক মানুষের জন্য স্বল্পসুদে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করছে। এরই মধ্যে ৪৮ হাজার গ্রাহককে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয়েছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত যুবকদের উদোক্তাদের গড়ে তুলতে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবদের এনআরবিসি ব্যাংকঋণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। সব মানুষের সেবার আওতায় আনতে ইসলামিক ব্যাংকিং আল আমিন চালু করা হয়েছে। গ্রাহকদের সহজে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে চালু করেছে প্লানেট অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা, ঋণ আবেদন, টাকা স্থানান্তর, বিভিন্ন বিল পরিশোধ এবং চেক ও কার্ড ছাড়াই টাকা উত্তোলন করা যাচ্ছে। নতুন নতুন সেবার উদ্ভাবন ও প্রসাারে এনআরবিসি ব্যাংক ৬টি ক্যাটাগরিতে এশিয়ার সেরা ব্যাংক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে একাধিকবার।

বিগত ৫ বছরের এনআরবিসি ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী হয়েছে। ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ২০১৭ সালে ছিল ৭৩৭ কোটি টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭৯২ কোটি টাকা। ২০১৭ ব্যালান্সশিটের আকার ছিল ৭ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। ৫ বছরে আড়াই গুণ বেড়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে আমানতের পরিমাণ ৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। প্রায় তিনগুণ বেড়ে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ১০৭ কোটি টাকা।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচাল (এমডি) অ্যান্ড সিইও গোলাম আউলিয়া বলেন, করোনাভাইরাস, যুদ্ধবিগ্রহ ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি অর্থনীতির অনুকূলে নেই। এর মধ্যেও তুলনামূলকভাবে এনআরবিসি ব্যাংক ভালো করছে। এর অন্যতম কারণ আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করছি, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে এবং মানুষের কাছে গিয়ে সেবা দিচ্ছি। এতে মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। এজন্য আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ, মুনাফাসহ সব সূচকে এনআরবিসি ব্যাংক দ্রুত এগোচ্ছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.