আজ: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২০ অক্টোবর ২০১৫, মঙ্গলবার |

kidarkar

ইউনাইটেড এয়ারের দুর্নীতি বন্ধে বিনিয়োগকারীদের ফের চিঠি

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের দুর্নীতি বন্ধে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) চিঠি দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। জিএমজি এয়ারলায়ন্সের মতো যেন এ কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের অর্থ লুটপাট করতে না পারে সেজন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ.কে.এম মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়।

এর আগেও তারা একই বিষয়ে চলতি বছরের গত ১৭ জুন আরেকটি চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়েছে। যা পত্র-পত্রিকায় এসেছে। পুঁজিবাজারে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত হয়ে আইপিওর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এর পরের বছরই কোম্পানিটি রাইট ইস্যুর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আরও ৩১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করে। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কোম্পানিটি এখনো পর্যন্ত কোনো ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। শুধুমাত্র স্টক ডিভিডেন্ড দিয়ে শেয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪১৫ কোটি টাকা নেয়ার পরও কেন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে ১০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এ কোম্পানির চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে এবং পি.ডিআর অ্যাক্ট প্রয়োগের কথা চিন্তা করছে। এই ১০০ কোটি টাকার পাশাপাশি চেক প্রতারনার মামলা এবং বাজার থেকে নেয়া ৪১৫ কোটি টাকা কোথায় গিয়েছে তার হিসাব আজও পায়নি বিনিয়োগকারীরা।

পুনরায় পুঁজিবাজার থেকে ৬২৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা লুন্ঠনের জন্য টাকার বিনিময়ে ইজিএমে দালাল চক্রের মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নিয়েছে। যে সমস্ত বিনিয়োগকারী নামধারী দালাল চক্র উক্ত ইজিএমে ছিলেন তাদের নাম কোম্পানির ঐদিনের ইজিএমের মিটিং খাতায় পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে নতুন করে টাকা উত্তোলনের প্রস্তাবনা কোম্পানি আপনার কার্যালয়ে জমা দিয়েছে।

সিভিল এভিয়েশনের কাছে বকেয়া ১০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ২ কোটি ১৬ লাখ ৮ হাজার ৩০৮ টাকা না দিতে পারায় গত ৮ অক্টোবর চেক প্রতারনার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) একটি মামলা করে। এই ধরনের একটি কোম্পানি আবার ও পুঁজিবাজার থেকে নতুন করে ৬২৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উত্তোলনের পায়তারা করছে।

এ কোম্পানির পরিচালকদের হাতে ৩০ শতাংশ শেয়ার না রেখে আইন লঙ্ঘন করেছে। কোম্পানিটি ৭১.৯৪ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে এবং মাত্র ৮.৪৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে পরিচালকদের কাছে।

নামেমাত্র শেয়ার ধরে রেখে বছরে পর বছর শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে কোম্পানির পরিচালকরা। অন্যদিকে গত ছয় মাস ধরে পুঁজিবাজারে এ কোম্পানির শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে লেনদেন হয়েছে। নতুন করে অর্থ লোপাটের জন্য কোম্পানিটি তাদের শেয়ার দরে প্রভাবিত করতে ভূমিকা রেখেছে। যে কারণে এখন এর শেয়ার দর ফেসভ্যালুর কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। তাই মহোদয়ের নিকট আবেদন, জিএমজি এয়ারলাইন্স থেকে শিক্ষা নিয়ে এ কোম্পানিটির অর্থ লুণ্ঠনের পথ বন্ধ রেখে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। এবং বিনিয়োগকারীদের ৪১৫ কোটি টাকা ফেরত পাওয়ার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্যও জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানান, কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির পর পুঁজিবাজার থেকে শুধু নিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের এখন পর্যন্ত কিছু দিতে পারেনি। শুধু বছরের পর বছর স্টক ডিভিডেন্ড দিয়ে শেয়ারের সংখ্যা বাড়িয়ে যাচ্ছে। কোম্পানির পরিচালকরা ভঙ্গুর, ব্যবহার অনুপোযোগী বিমান কিনে নিজেদের পকেট ভরছে। ঠিক যেমনটি করে জিএমজি এয়ারলায়ন্স প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এখন ইউনাইটেড এয়ারওয়েজও বিনিয়োগকারীদের পথের ফকির বানানোর পায়তারা করছে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অনুরোধ ৩৩ লক্ষ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।

উল্লেখ্য, উল্লেখিত চিঠিটির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রী, তথ্য মন্ত্রী, ডাইরেক্ট জেনারেল ডিজিএফআই, অর্থ মন্ত্রনালয়ের সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/রু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.