অবশেষে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের দাবী মেনে নিচ্ছে এনবিআর
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ১০ শতাংশ হারে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আদায় করতে হবে না। আসন্ন বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির জন্য আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩(ও) ধারা বিলুপ্ত করা হবে। এতে বিও অ্যাকাউন্ট ধারীরাও সম্ভাব্য হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনবিআর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এনবিআর এর দায়িত্বশীল এক সদস্য শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানায়, চলতি ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে সংযোজীত আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩(ও) ধারা আসন্ন বাজেটে বিলুপ্ত করা হবে। এতে এসব প্রতিষ্ঠানকে গ্রাহকের বিও থেকে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স কর্তন করতে হবে না। এর ফলে আগামী অর্থবছরে শেয়ারবাজার থেকে কোন কোম্পানি বা ফার্মের উদ্ভূত মুনাফা নিজেদেরই নিজেদের আয়কর রিটার্নে দেখাতে হবে। সে অনুযায়ী পরবর্তীতে কর আদায় করা হবে। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকেই নিজেদের বিও হিসাবে ক্যাপিটাল গেইন হিসাব করে প্রযোজ্য কর (ট্যাক্স) বছর শেষ হওয়ার আগে পরিশোধ করে এনবিআর-কে জানাতে হবে।
এর আগে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ফার্ম বা কোম্পানি করদাতার মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর আদায়ের বিধান করা হয়েছিল।। যা চলতি ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩(ও) ধারার অধীনে উৎসে কর্তনযোগ্য। সিডিবিএল’র তথ্য অনুসারে বিভিন্ন ডিপিতে (ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্টস) সর্বমোট ৭,৯৯১টি কোম্পানির বিও অ্যাকাউন্ট আছে। আইন অনুসারে ট্রেকহোল্ডার, ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও কাস্টোডিয়ানদের সারা বছরের কর্পোরেট ক্যাপিটাল গেইন, সুদ ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে উৎসে কর কর্তন করা হয়।
কিন্তু ট্রেকহোল্ডারগণ এনবিআর এর কাছে এ করের বিরোধিতা করে আসছিল।
এই বিষয়ে এনবিআর এর কাছে দেয়া এক বাজেট প্রস্তাবনায় ট্রেকহোল্ডারগণের পক্ষ থেকে বলা হয়, ট্রেকহোল্ডারদের পক্ষে কোন কোম্পানির ক্যাপিটাল গেইন হিসাব করে উক্ত কর উৎসে আদায় সম্ভব নয়। লিংক অ্যাকাউন্টে একাধিক জায়গায় শেয়ার থাকলে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। পেছনের ৫ বছরের পুঞ্জীভূত ক্যাপিটাল লসের সমন্বয় করে অর্জিত ক্যাপিটাল গেইনের হিসাব করা ট্রেকহোল্ডার পক্ষে সম্ভব নয় এবং অধিকাংশ ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির এ সংক্রান্ত কাজের সামর্থ্যও নেই।
এই বিষয়ে ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের আহবায়ক মো: আহসানুল ইসলাম শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, ৫৩(ও) ধারাটি বিলুপ্ত হলে ব্রোকারেজ হাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকারদের কোন আর্থিক সুবিধা হবে না। তবে এই ধারার কারণে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আদায়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে যে জটিলতার মুখে পড়তে হয়েছে সেটা থেকে তারা মুক্ত হবে।
অপরদিকে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরুজ্জামান বলেন, বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা ৫৩(ও) ধারাটি বাতিলের প্রস্তাব করেছিলাম। এর প্রেক্ষিতে এনবিআর এর পক্ষ থেকে আশ্বাসও পাওয়া গিয়েছিল। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকেও এই ধারা বাতিলের সুপারিশ করা হয়। আর আসন্ন বাজেটে এটি বাতিল হয়ে গেলে আমাদের ওপর থেকে একটা বিশাল বোঝা নেমে যাবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু