আবদুল গাফ্ফারের শাস্তির দাবী বিএনপির
শেয়ারবাজার ডেস্ক: কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে অভিযোগ করে তার তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি আব্দুল মোমেন কেন গাফ্ফার চোধুরীকে সরকারি খরচে নিয়ে এ ধরনের ইসলামবিদ্বেষী অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন, তার প্রতিবাদও করা হয়েছে। তাই মোমেনের বিরুদ্ধে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত ও দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়েছে দলটি।
রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি ও নিন্দা প্রকাশ করেন দলটির মুখপাত্র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী আস্তিক বা নাস্তিক হতে পারেন। তিনি বলেছেন, তিনি আগে বাঙালী, পরে মুসলমান। এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু ইসলাম নিয়ে, মহান আল্লাহকে নিয়ে কথা বলে তিনি শুধু নিউইয়র্ক প্রবাসী বা বাংলাদেশী মুসলমানদের নয়, সমগ্র বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের মনে আঘাত দিয়েছেন। তিনি প্রকাশ্যে খোদাদ্রোহী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। আমরা তার এ ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাই।
রিপন বলেন, ‘যে কোনো সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের আগে কর্তৃপক্ষের কাছে তা জমা দিতে হয়। তারা তা দেখে প্রকাশের অনুমোদন দেয়। জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনের ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিষয়ে সেমিনারে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি খরচে নিয়ে ইসলামবিরোধী, আল্লাহবিরোধী বক্তব্য দেয়া হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের বিষয়ে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েছিল কিনা, সরকারের কাছে তা পরিষ্কার জানতে চাই। একই সঙ্গে এর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জড়িত কিনা, তাও তদন্ত করে সরকারকে প্রকাশ করতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী মহান আল্লাহর ৯৯টি নাম নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলেছেন। তার এই বক্তব্যের পর সারা পৃথিবীর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মনে আঘাত পেয়েছে। আমরা এর তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করছি।
তিনি আরও বলেন, এই বক্তব্য দেওয়ার পর অনুষ্ঠান বন্ধ না করে জাতিসংঘ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আব্দুল মোমেন তাকে সংবর্ধনা ক্রেস্ট উপহার দিয়েছেন। আমরা বিস্মিত হয়েছি, জাতিসংঘ মিশনে আল্লাহবিদ্বেষী কথা বলার জন্য গাফ্ফার চৌধুরীকে অতিথি হিসেবে হাজির করা হল।
‘আমরা বিশ্বাস করতে চাই না এ ঘটনায় সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা আছে। তাই সরকারের তদন্ত করে দেখা উচিত এতে আব্দুল মোমেনের কোনো হাত আছে কিনা’- বলেন তিনি।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, গাফ্ফার চৌধুরী শুধু ধর্ম নিয়েই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসে সে দেশের বিনাশ কামনা করেছে। এতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে প্রভাব পড়বে। এ জন্য ওই ব্রিটিশ নাগরিকের যদি বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকে (তিনি দ্বৈত নাগরিক হলে) তাহলে আমাদের সংবিধান অনুযায়ী তার বিচার দাবি করছি।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে ৩ জুলাই বিকেলে বাংলাদেশের জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে এক অনুষ্ঠানে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, আজকের আরবী ভাষায় যেসব শব্দ; এর সবই কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম। তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল।’
নারীদের বোরকা ও হিজাব নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এটা হচ্ছে ওহাবিদের লাস্ট কালচারাল ইনভলব। আমি অবাক হচ্ছি। ক্লাস টুয়ের মেয়েরা হায়েজ-নেফাস পড়বে! এটা আমাদের ধর্ম শিক্ষা হতে পারে?’ মুসলমান মেয়েরা মনে করে হিজাব, বোরকা হচ্ছে ইসলামের আইডিন্টিটি। আসলে কী তাই? বোরকা পরে যাচ্ছে কিন্তু প্রেম করছে। আবার ইন্টারনেটেও প্রেম করছে। আচরণ ওয়েস্টার্ন কিন্তু বেশভূষা ইসলামিক করে আত্ম-প্রতারণা করছে তারা।’
শেয়ারবাজারনিউজ/অ