আজ: সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪ইং, ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০২ এপ্রিল ২০২২, শনিবার |

kidarkar

রোজার আগেই আরেক দফা চড়াও নিত্য পণ্যের দাম

শেয়ারবাজার ডেস্ক:রমজান মাস শুরুর আগে আরেক দফা বাড়লো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। অর্থাৎ টানা তিন মাস ধরে কমবেশি দাম বড়েই চলেছে। বাজারের তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে খোলা সয়াবিন, খোলা পাম অয়েল, মসুর ডাল। দাম বেড়েছে মুরগি-মাছ-মাংসের পাশাপাশি ইফতার ও সেহরিতে ব্যবহৃত নিত্যপণ্যের। এতে করে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ তাদের আয় দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য কিনতে পারছে না।

নতুন করে মাংসের দাম বেড়েছে
শুক্রবার (১ এপ্রিল) বাজারে দেখা যায়, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকার নিচে কিনতে পারছে না ক্রেতারা। হাড় ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি। কোথাও কোথাও হাড়সহ ৭৫০ টাকায় ছাড়িয়েছে। এদিকে গত সপ্তাহের ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। এছাড়া লেয়ার ২৬৫ ও কক মুরগি ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে পিস প্রতি ৫০০, মাঝারি ৪৫০ ও ছোট মুরগি ৪০০ টাকায়।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ শতাংশ। আর ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ শতাংশের মতো।

এদিকে ফার্মের মুরগির ডিমও গত সপ্তাহের মতো ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।

বেগুনের কেজি ১০০ টাকা
রোজা শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়ে গেছে বেগুনের দাম। একলাফে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে কোনও কোনও বাজারে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে একশ’ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৭০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে এই বেগুনের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণত রোজার সময় বাজারে বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়, এবারও তেমনটি হয়েছে।

দাম বেড়েছে মসুর ডালের
ছোট দানা মসুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। গত সপ্তাহে এই ডাল বিক্রি হয়েছে ১১৫ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার সেই একই মসুর ডাল ১২০ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। গত তিন সপ্তাহ ধরে টানা এই পণ্যটির দাম বাড়ছে।

নতুন করে বেড়েছে খোলা সয়াবিনের দাম
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম সামান্য কিছু কমলেও ভোক্তার জন্য তেমন কোনও সুখবর নেই সয়াবিন তেলের বাজারে। যদিও সয়াবিন তেলের উৎপাদন, খুচরা ও সর্বশেষ আমদানি পর্যায়ে সরকার মোট ৩০ শতাংশ কর ছাড় দিয়েছে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু বাজারে তেমন এর প্রভাব এখনও দেখা যায়নি।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৪ টাকা। গত সপ্তাহে এই সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৫৩ টাকা লিটার। আর পাম অয়েল (খোলা) ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে খোলা পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৩৬ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি করেছেন ৭৪০ থেকে ৭৬০ টাকা।

চিনি আগের মতোই ৮০ টাকা কেজি
এদিকে চিনি আমদানিতে শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু গত চার সপ্তাহ ধরে এর প্রভাব দেখা যায়নি বাজারে। আগের মতোই ৮০ টাকায় চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম
ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শালগম (ওলকপি) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মূলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এদিকে সজনের ডাটা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। পাকা টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। রোজায় লেবুর চাহিদা থাকায় হালিপ্রতি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৮০ টাকায়।

৩০ টাকায় নেমেছে পেঁয়াজ
কিছুদিন আগে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম কমছে। খুচরা পর্যায়ে গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আর ভালো মানের আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।

অন্যান্য পণ্যের দাম
আলু ২০ টাকা, দেশি আদা ৯০-১০০, চায়না আদা ৮৫, চায়না রসুন ১০০, দেশি রসুন ৬০- ৭০ ও শুকনা মরিচ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুগডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৮০, অ্যাংকর ডাল ৫৫, ছোলা ৭৫-৮০ টাকা। এছাড়া মিনিকেট চাল ৫৫, নাজিরশাইল চাল ৭০ ও চিনি ৭৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মাছের দাম চড়া
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মাছের বাজারও এখন চড়া। বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছের দোকানেই ভিড় বেশি। ছোট পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০, বড় পাবদা ৬০০, গলশা ৭০০, পোয়া মাছ ৬০০, বাইম ৯০০, বাতাসি ৮০০, মলা ৫০০, কাঁচকি ৫০০-৬০০, শিং ৪৫০-৫০০ এবং গুড়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.