যাকাতের প্রস্তুতি
প্রস্তুত শাড়ী-লুঙ্গি তবুও জমেনি বেচাকেনা

এ জেড ভূঁইয়া আনাস: সম্পদকে শুদ্ধ করতে ইসলামের বিধান অনুযায়ী যাকাত দিয়ে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। বছরের যে কোনো সময় এই যাকাত দেয়া গেলেও অতিরিক্ত সওয়াবের আশায় একটি বড় অংশই বেছে নেন পবিত্র রমজান মাসকে।
নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর অতিবাহিত হলে মালিকের ওপর যাকাত ফরজ হয়। মূলত এর মাধ্যমে সম্পদকে শুদ্ধ করা হয়।
সম্পদের যাকাত হিসেবে গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয় নগদ অর্থের পাশাপাশি পরিধেয় কাপড়। যে কারণে রোজা এলেই বেড়ে যায় যাকাতের কাপড় বিক্রি। আর যাকাত দাতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরাও নেন বাড়তি প্রস্তুতি। প্রতিবছরের মতো এবারও যাকাতের শাড়ী-লুঙ্গি নিয়ে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা। তবে পবিত্র রমজান মাসের অষ্টম রোজা অতিবাহিত হলেও এখনও জমে উঠেনি যাকাতের কাপড় বিক্রি।
রোববার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থিত মৌচাক মার্কেট, পীর ইয়ামেনী মার্কেট, বঙ্গ মার্কেট, ইসলামপুর ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে। এসব মার্কেটের প্রতিষ্ঠানগুলো যাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গিরি প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও সে তুলনায় এখনও বিক্রি জমে উঠেনি।
এসব মার্কেটের বিক্রেতারা জানান, রমজানের আগে পবিত্র শবেরাতের আগ মুহুর্তে কিছুটা বিক্রি হলেও এখন আর বিক্রি নেই। তারা বলেন, অনেকেই আগেই কিনে রেখেছেন যাকাতের কাপড়। তবে ১৫’ই রমজানের পর থেকে যাকাতের কাপড় বিক্রি শুরু হতে পারে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা সাধারাণত ঈদের কয়েক দিন আগে কাপড় কিনে গ্রামে নিয়ে যান। এ কারনে বলা যায় চাঁদ রাত পর্যন্ত বিক্রি চলবে।
তবে কাপড় কেনায় পরিবর্তন এসেছে ক্রেতার মাঝে। কাপড় বিক্রেতারা জানান, একটা সময় সবাই কমদামি বা সস্তা কাপড় খুঁজতো এখন বেশি দামের কাপড়ও কেনেন। ক্রেতার একটা বড় অংশ বেশি দামের কাপড় যাকাত হিসেবে গরিবের মাঝে বিতরণ করে থাকেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবার যাকাতের যেসব শাড়ি বিক্রি হচ্ছে তার মধ্যে নিম্ন মানের শাড়ির দাম প্রতি পিস ২৯০ থেকে ৩৫০ টাকা। এর থেকে একটু ভালো মানের শাড়ির দাম ৩২০ টাকা থেকে ৩৮০ টাকা। আর যাকাতের স্ট্যান্ডার্ড মানের শাড়ির দাম ৪০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। তবে অনেক ক্রেতার চাহিদার ভিত্তিতে এর থেকেও বেশি দামের শাড়ি যাকাতের কাপড় হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে, যেগুলোর দাম রয়েছে ৬৫০ থেকে এক হাজারের মধ্যে।
পীর ইয়ামেনী মার্কের্টে স্বর্ণলতা শাড়ী বিতানের ম্যানেজার বিমল শেয়ারবাজার নিউজ বলেন, আমাদের এখানে শবেবরাতের আগে একটা বিক্রি হয়েছে। এখন পনের রোজার পর এবং রোজার শেষভাগে বিক্রি বাড়বে। বড় ব্যবসায়ীরা রোজার শেষভাগে কাপড় কিনে গ্রামের যাকাত হিসেবে নিয়ে যান।
একই কথা জানান, মৌচাক মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল্লা আয়াজ শেয়ারবাজার নিউজ বলেন, কাপড় বিক্রি এখনও জমে উঠেনি। করোনার পর আমরা ভেবেছিলাম ভালো বিক্রি হবে। অন্য বছরের লোকসান কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে কিন্তু বিক্রি নেই।
এসব মার্কেটে নিম্নমানের লুঙ্গির দাম প্রতি পিস ১৬৫ টাকা থেকে ২২০ টাকা। এর থেকে একটু ভালো মানের লুঙ্গির দাম ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড মান হিসেবে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকার মধ্যেও বিক্রি হচ্ছে যাকাতের লুঙ্গি।
তবে লুঙ্গির বাজারেও বিক্রি নেই তেমন। হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক আনোয়ার হোসেন শেয়ারবাজার নিউজ বলেন, এবারের যাকাতের কেনাকাটার জন্য আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তবে ক্রেতার দেখা নেই। হয়তো রোজার মাঝামাঝি সময়ে ক্রেতার আগমণ হবে। অনেকেই ব্যবসায়ী আছেন তাদের ব্যভসা গুটিযে রোজার শেষ ভাগে এসব লুঙ্গি কিনে তারা গ্রামে চলে যান। আশা করি বিক্রি হবে।
পকেটে না থাকিলে মাল, মিটিংয়ে বাজেনা তার।