পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে অপারগ আরামিট

আতাউর রহমান: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড পরিশোধ মূলধন বাড়িয়ে ৩০ কোটি টাকা না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। কোম্পানিটির নতুন কোনো বিনিয়োগে যাওয়ার পরিকল্পনা এবং কোনো ধরনের মেয়াদী ঋণ বা কার্যকরী মূলধন ঋণ নেই, যা পরিশোধ করতে পরিশোধীত মূলধন বাড়ানো যেতে পারে। তাই কোম্পানিটি পরিশোধীত মূলধন বাড়িয়ে ৩০ কোটি টাকা করার বিষয়ে অপারগতা জানিয়ে বিএসইসিকে চিঠি দিয়েছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি চিঠি বিএসইসির কাছে পাঠিয়েছে আরামিট লিমিটেড। সেই সাথে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) অবহিত করা হয়েছে। এর আগে পরিশোধীত মূলধন বাড়িয়ে ৩০ কোটি টাকা করার বিষয়ে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয় কোম্পানিটি।
ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা বজায় রাখার বিষয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম (তালিকাকরণ) প্রবিধান, ২০১৫ এর প্রবিধান ৯ (১) এর সাথে অসঙ্গতির বিষয়ে উল্লেখ করে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, আরামিত লিমিটেড ১৯৮৪ সালে ডিএসইতে ২ কোটি টাকা পরিশোধীত মূলধন সহ তালিকাভুক্ত হয়েছিল এবং সিএসইতে ১৯৯৯ সালে চার কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির প্রধান পণ্য হল সিমেন্ট শীট এবং তাদের আরও ৪ ধরনের পণ্য রয়েছে।
এদিকে অন্য তিন-চারটি কোম্পানিও একই ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে এবং প্রতিটি কোম্পানি বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে আরও বেশি করে মার্কেট শেয়ার অর্জনের চেষ্টা করছে। কিন্তু সব কোম্পানির মোট উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমান বাজারের চাহিদার চেয়ে বহুগুণ বেশি, সে কারণে সময়ে সময়ে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয় এবং বিক্রয়মূল্য কমাতে হয়। যার জন্য ধারাবাহিক মুনাফা বজায় রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে কোম্পানির।
আরো জানায়, প্রসারিত বাজারে মূল্য প্রতিযোগিতা এবং পণ্যের সীমিত ব্যবহারের কারণে ২০২০-২১ সাল থেকে কোম্পানি ক্ষমতার ৯৩ শতাংশ ব্যবহার করছে এবং ৭ শতাংশ অব্যবহৃত রেখেছে। এর পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে সমস্ত উৎপাদন বাজারের মোট চাহিদার চেয়ে বহুগুণ বেশি।
এছাড়া কোম্পানিটি পূর্বে শেয়ার ইস্যু করার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের শতভাগ ব্যবহার করছে। যে কারণে কোম্পানির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে উল্লিখিত কারণে ভবিষ্যতে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কোম্পানির কোনো নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনা নেই। এছাড়া কোম্পানির কোনো ধরনের মেয়াদী ঋণ বা কার্যকরী মূলধন ঋণ নেই, যা পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে পরিশোধ করা যেতে পারে। যদি মূলধন বাড়ানো হয় তাহলে শেয়ার প্রতি আয় এবং শেয়ার প্রতি বাজার মূল্যের তুলনায় শেয়ার প্রতি লভ্যাংশ কমে যাবে। তাই বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকায় বাড়ানো কোম্পানির পক্ষে একেবারেই অবাস্তব।
তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোম্পানির ব্যবস্থাপনার পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর কোন পরিকল্পনা নেই এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপে কোম্পানিকে উপরোক্ত প্রবিধান থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে কোম্পানিটি।
এ বিষয়ে আরামিটের কোম্পানি সচিব সৈয়দ কামরুজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি।