বাজেটে পুঁজিবাজারের আশার প্রতিফলন ঘটেনি, দাবি সংশ্লিষ্টদের
এ জেড ভূঁইয়া আনাস: পেশ করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব হবে বলে ধারণা করা হলেও তার প্রতিফলন ঘটেনি। তাই এবারের বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব নয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক।
শনিবার (১১ জুন) বাজেট পরবর্তী আলাপকালে শেয়ারবাজার নিউজকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং তালিকাভূক্ত নয় এমন সকল কোম্পানির করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান বাড়েনি, যা পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। এ কর ব্যবধান আরও বাড়ানো হলে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হতো বলে মনে করছেন তিনি।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও গতিশীলতা বাড়াতে বেশ কিছু সুপারিশ ও দাবি জানিয়েছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে কেবলমাত্র করপোরেট কর কমানো ছাড়া পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের আর কোনো সুপারিশ আমলে নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমানো হয়েছে। এতে খুব একটা কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ যে সব কোম্পানি তালিকাভুক্ত নয়, তাদেরও কর হার কমানো হয়েছে। এতে দুই ধরনের কোম্পানির মধ্যে কোন পরিবর্তন আসেনি। উচিত ছিল পুঁজিবাজারে কোম্পানির করহারে আরও ছাড় দেয়া। তাহলে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হতো।’
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব নয়। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীরা যা যা প্রত্যাশা করেছিল, বাজেটের তার প্রতিফলন ঘটেনি। তাই সংশোধিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাশর্তে ১০ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে শুধু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রাখার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ১৫ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি। আর লভ্যাংশের উপর থেকে দ্বৈত কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।’
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ‘কোভিড অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, পাবলিকলি ট্রেডেড বা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার বর্তমানে সাড়ে ২২ শতাংশ। এটি কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। আর তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ইস্যু করা হয়েছে, সেসব কোম্পানির কর হার ২.৫০ শতাংশ কমিয়ে বাজেটে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এই ২.৫০ শতাংশ কর ছাড়ের সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনের শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সব আয় ব্যাংকের মাধ্যমে এবং ১২ লাখ টাকার উপরে ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে।
এছাড়াও তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ বা তার কম শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ইস্যু করা হয়েছে, সেসব কোম্পানির কর হার অপরিবর্তিত বা ২২.৫০ শতাংশ থাকবে। অন্যদিকে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি তাদের মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ১০ শতাংশের কম আইপিও মাধ্যমে বাজারে ছেড়েছে সেসব কোম্পানিকে আগামী অর্থবছরেও ২২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আর শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে কর দিতে হবে ২৫ শতাংশ হারে।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: আর্থিক শিক্ষা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের উৎস হিসাবে পুঁজিবাজার অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি নিরপেক্ষ, সুসংগঠিত এবং স্বচ্ছ পুঁজিবাজার অপরিহার্য। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ জারীর মাধ্যমে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা হিসাবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ১৯৯৩ সালের ৮ জুন প্রতিষ্ঠিত হয়, যার মূল লক্ষ্য হলো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ, সিকিউরিটিজ মার্কেটের উন্নয়ন এবং এতদসংক্রান্ত বিষয়াবলী বা আনুষাঙ্গিক বিধান প্রণয়ন।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.midwaybd.com/blog/2721279
dhaka stock exchange bangladesh