লিস্টিং রেগুলেশনের গেজেট প্রকাশ: নো অবজেকশন চিঠি পেলেই আইপিও অনুমোদন
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন,২০১৫’র গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছ কোম্পানি আনতে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে। একটি কোম্পানি আইপিও অনুমোদন পেতে ইস্যু ম্যানেজারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) প্রসপেক্টাস জমা দিতে হয়। কিন্তু এখন থেকে এই প্রসপেক্টাস আর বিএসইসিতে নয় বরং উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ জমা দিতে হবে। স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানির প্রসপেক্টাস যাচাই-বাচাই করে এর বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে। কোম্পানি আইপিওর পাবার যোগ্যতা বা অযোগ্যতার প্রতিবেদন স্টক এক্সচেঞ্জ বিএসইসিতে জমা দেবে।
অর্থাৎ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন যাচাই করে যদি আইপিও অনুমোদন পাবার যোগ্য হয় তাহলে স্টক এক্সচেঞ্জকে ‘নো অবজেকশন’ চিঠি বিএসইসিতে জমা দিতে হবে। বিএসইসি পরবর্তীতে কোম্পানিকে আইপিওর অনুমোদন দেবে। যদি স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র জানায় তাহলেও বিএসইসিকে এর কারণ দর্শাতে হবে। বিএসইসি চাইলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে আইপিওর অনুমোদন দিতে পারে।
এক্ষেত্রে আইপিও সাবস্ক্রিপশন শেষে সিডিবিএলে শেয়ার জমা করার পর লেনদেনের জন্য যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন নেয়া লাগে সেই নিয়ম আর থাকছে না।
জানা যায়, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছ কোম্পানি আনতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ যথাক্রমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ অনুমোদনের জন্য বিএসইসিতে প্রস্তাব দেয়া হয়। সেই প্রস্তাব কমিশন আজকের অনুষ্ঠিত ৫৪৫তম সভায় অনুমোদন দেয়। এরপর রবিবার ১২ জুলাই এ আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, আগেও এ বিষয়টি ছিল। মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল, এখন আবার তা চালু হচ্ছে। স্টক এক্সচেঞ্জের অনাপত্তি বাধ্যতামূলক করা হলে যেটা হবে সেটা হলো কোম্পানির লেনদেন বা তালিকাভুক্তি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আর কোনো শঙ্কার মধ্যে থাকতে হবে না।
তবে অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার তো বিএসইসি’র কাছেই থাকছে। এমনকি স্টক এক্সচেঞ্জ যদি রাজি না থাকে তবেও কমিশন চাইলে অনুমোদনের কারণ ব্যাখ্যা করে কোম্পানিকে অনুমোদন দিতে পারে।
এদিকে লিস্টিং রেগুলেশনের বিষয়ে সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালি-উল-মারুফ মতিন শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানান, আগে একটি কোম্পানিকে আইপিও অনুমোদন নিতে হলে ইস্যু ম্যানেজারের মাধ্যমে বিএসইসিতে প্রসপেক্টাস জমা দিতে হতো। এখন থেকে এটি বিএসইসিতে নয় উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। স্টক এক্সচেঞ্জ যাচাই-বাচাই করে কোম্পানির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে বিএসইসিতে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে ‘নো অবজেকশন’ প্রতিবেদন পেলেই তালিকাভুক্ত হতে পারবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (লিস্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ এবং চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (লিস্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ এর প্রস্তাবনা কিছু পরিবর্তন/পরিবর্ধন/সংযোজন/সংশোধন সাপেক্ষে কমিশন অনুমোদন করেছে। উক্ত রেগুলেশন দুটিতে অন্যান্যের মধ্যে যে পরিবর্তন/পরিবর্ধন/সংযোজন/সংশোধন করা হয়েছে। যেসব ক্যাটাগরিতে সংযোজন করা হয়েছে সেগুলো হলো :
ক) প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) এর জন্য দাখিলকৃত পাবলিক অফার ডকুমেন্টের উপর স্টক এক্সচেঞ্জের সুপারিশের বিধান;
খ) ডেট সিকিউরিটিজ (বন্ড,ডিবেঞ্চার,ইত্যাদি) এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ড লিষ্টিং এর শর্তাদির বিধান;
গ) ওটিসি মার্কেটের সিকিউরিটিজগুলো পুন:তালিকাভুক্তির বিধান;
ঘ) তালিকাভুক্তি পরবর্তী ইস্যুয়ার কোম্পানির পরিপালন সম্পর্কিত বিধান;
ঙ)ইস্যুয়ার কোম্পানির তথ্যাদি ই-ফাইলিং এবং ওয়েব পোষ্টিং সংক্রান্ত বিধান;
চ) তালিকাভুক্ত ইস্যুয়ার কোম্পানির স্বপ্রণোদিত তালিকাচ্যুতির বিধান;
ছ) ইস্যুয়ার কোম্পানির বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক পরিদর্শন করার বিধান এবং
জ) ইস্যুয়ার কোম্পানির বিষয়ে কোম্পানি এবং ইহার পরিচালক,কর্মকর্তা এবং নিরীক্ষক এর নিকট হতে স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক তথ্যাদি/ব্যাখ্যা,ইত্যাদি তলব করার ক্ষমতা।
শেয়ারবাজারনিউজ/সা