ডি-৮সিসিআই বিজনেস ফোরাম অ্যান্ড এক্সপো শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার
নিজস্ব প্রতিবেদক: ডি-৮ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডি-৮সিসিআই) প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘ডি-৮ সিসিআই বিজনেস ফোরাম অ্যান্ড এক্সপো ২০২২’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সম্মেলনে ডি-৮ সিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম অনুষ্ঠান সূচি, আসন্ন আয়োজন থেকে প্রত্যাশা নিয়েও আলোচনা করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডি-৮ সিসিআই -এর সেক্রেটারি জেনারেল আশরাফুল হক চৌধুরী এবং এফবিসিসিআই-এর পরিচালক সুজীব রঞ্জন দাশ।
এই বছরের ফোরামে বাংলাদেশ ও অন্য ৭টি সদস্য দেশ মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্কের মধ্যকার ‘ভ্যালু চেইন’-এর বৃহৎ পরিসরের ৬টি ক্ষেত্রের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ক্ষেত্রগুলো হলো, পণ্যসামগ্রী- খনিজ ও শক্তি, শ্রম-নির্ভর পণ্য- বস্ত্র, পোশাক, হালকা প্রকৌশল ও চামড়াজাত পণ্য; শ্রম-নির্ভর সেবা- পরিবহন, কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন; অঞ্চল-ভিত্তিক প্রক্রিয়াকরণ- কৃষি, জলজ-সম্পদ, পশুসম্পদ; জ্ঞান-ভিত্তিক পণ্য- ইলেকট্রনিক্স উপাদান, সেমিকন, সাইবার নিরাপত্তা সরঞ্জাম উপাদান, লজিস্টিকস ও পরিবহন সরঞ্জাম এবং জ্ঞান-ভিত্তিক সেবা- আইসিটিতে পেশাদার সেবা, অর্থনৈতিক খাতে প্রযুক্তি সক্ষম করা, ৪১আর, রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই, আইওটি, সাইবার সিকিউরিটিজ, দক্ষতা, গবেষণা ও উন্নয়ন।
এছাড়া, ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারন্টে অব থিংস, ডেটা অ্যানালিটিক্স, কাজের ভবিষ্যত এবং প্রয়োগ-ভিত্তিক দক্ষতা ইত্যাদির মধ্যে ডি-৮-এর অংশীদারিত্ব নিয়েও ফোরামে আলোচনা করা হবে।
ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন-এ আলোচ্য ক্ষেত্র হিসেবে আরও থাকবে; হালাল অর্থনীতি, ব্লু ইকোনমি, সাইবার নিরাপত্তা, রোবোটিক্স, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, যুব-নারী ক্ষমতায়ন ও এমএসএমই, এডটেক, এগ্রিটেক, হেলথটেক, পণ্যের মান ও সমন্বয়, ক্রস কারেন্সি সোয়াপ, বার্টার সিস্টেম এবং ব্লক চেইন।
কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকি মোকাবেলায় এবং বৈশ্বিক উন্নয়নে সাড়া প্রদানের অংশ হিসেবে, কৃষি খাত, উৎপাদন খাত, টারশিয়ারি ও কোয়াটার্নারি খাতজুড়ে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশনের ক্ষেত্রে পিটিএ অনুমোদন ও সম্পৃকতার জন্য ডি-৮ সিসিআই একটি কৌশলগত রোডম্যাপ গঠনে কাজ করছে। অনুষ্ঠানের প্রথমদিন সাধারণ পরিষদে সম্ভাব্য রোডম্যাপ ও এর কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা এবং দ্বিতীয় ডি-৮ মিনিস্ট্রিয়াল পর্যায়ে তা উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেওয়া হবে।
দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এই আয়োজনে বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের চেম্বারস অব কমার্সের সভাপতিবৃন্দ, প্রতিনিধি দল, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডি-৮ মিনিস্ট্রিয়াল-এর চেয়ারম্যান এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম এবং ডি-৮-এর সেক্রেটারি জেনারেল রাষ্ট্রদূত ইসিয়াকা আব্দুল কাদির ইমাম।
এছাড়া, ৮ সদস্য দেশের পক্ষ থেকে ৪০ জনেরও অধিক প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। আগত দর্শনার্থীদের জন্য এক্সপো জোন-এ ‘বিল্ড ইন বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন’-এ বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের স্টল থাকবে।
অনুষ্ঠিতব্য এক্সপো প্রসঙ্গে, ডি-৮ সিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, “ডি-৮ সিসিআই বিজনেস ফোরাম অ্যান্ড এক্সপো ২০২২, ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ ব্যবসা ও বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মধ্যকার ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন প্রতিপাদ্যের ওপর বিশেষ জোর দিবে।
বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির মতো সাম্প্রতিক ঘটনাবলী মুদ্রাস্ফীতিমূলক চাপ, সাপ্লাই চেইনে বিঘ্নতা এবং নিশ্চলতা-স্ফীতির জন্য দায়ী। আর তাই বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক টেকসই নিশ্চিতে ডি-৮-এর সদস্য দেশগুলোর ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন নিয়ে আলোচনার এখনই সময়।
তিনি আরও বলেন, “ডি-৮-এর ২৫ বছর পূর্তীতে আমি আশা করি, ডি-৮ সিসিআই বিজনেস অ্যান্ড এক্সপো ২০২২ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং ব্যবসার নতুন সুযোগ উন্মোচনে সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। এই সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্মটি ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর জন্য ব্যবসা ও বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং তাদের নিজ নিজ অর্থনীতিকে সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলেও আমরা আশাবাদী।
ডি-৮ সিসিআই সম্পর্কে-ডি-৮ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডি-৮ সিসিআই) বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্ক এই ৮ দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর একত্রে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, তৃতীয় এবং চতুর্মুখী সেক্টরে বিভিন্ন শক্তিসহ ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি রয়েছে।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ডি-৮ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর লক্ষ্য ছিল ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর ব্যবসায়িক খাতসমূহে সম্মিলিত সহযোগিতা প্রদান করা।
ডি-৮ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম এর সদস্য দেশগুলোর ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে বাণিজ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিল্প, পর্যটন, জ্বালানি এবং পরিবহনের মতো বিভিন্ন খাতে সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে; দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), দ্য ফেডারেশন অব ইজিপশিয়ান চেম্বারস অব কমার্স (এফইডিওসি), দ্য ইন্দোনেশিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (কাডিন), দ্য ইরান চেম্বারস অব কমার্স, ইন্ডাস্ট্রিজ, মাইন অ্যান্ড এগ্রিকালচার (আইসিসিআইএমএ), দ্য ন্যাশনাল চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অব মালয়েশিয়া (এনসিসিআইএম), দ্য নাইজেরিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব চেম্বারস অব কমার্স, ইন্ডাস্ট্রি, মাইনস অ্যান্ড এগ্রিকালচার (এনএসিসিআইএমএ), দ্য ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফপিসিসিআই) এবং ইউনিয়ন অব চেম্বারস অ্যান্ড কমোডিটি এক্সচেঞ্জস অব তুরস্ক (টিওবিবি)।