আজ: সোমবার, ২০ মে ২০২৪ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৫ জুলাই ২০২২, সোমবার |

kidarkar

বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী কেনিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে চায় আফ্রিকার দেশ কেনিয়া। এজন্য সরকারি পর্যায়ে চুক্তি সই, দুই শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক ও আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী নাইরোবি।

সোমবার (২৫ জুলাই) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ঢাকা সফররত কেনিয়ার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপাক্ষিক ও রাজনীতিবিষয়ক মহাসচিব রাষ্ট্রদূত মই লেমোশিরা।

তিনি জানান, শিগগিরই ঢাকায় কেনিয়ায় হাইকমিশন স্থাপিত হবে। এছাড়াও আকাশ পথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশ বিমান ও কেনিয়া এয়ারওয়েজের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

মই লেমোশিরা বলেন, কেনিয়ার খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, মানব সম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাত, আবাসন, তথ্যপ্রযুক্তি ও শিল্পখাতে বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। তার দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে সমগ্র আফ্রিকার বাজারে পণ্য সরবরাহ সম্ভব। পররাষ্ট্রনীতিতে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল নিয়েছে নাইরোবি। সে কারণে কেনিয়ার কাছে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত ও প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিকস, প্রক্রিয়াজাত সামুদ্রিক খাবার ও কৃষি পণ্য আমদানি করতে পারে কেনিয়া।

এ ছাড়া পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি, সমুদ্র অর্থনীতি ও কৃষি খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে কেনিয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে বলে মনে করেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

আফ্রিকার ৫৪টি দেশের সমন্বয়ে মুক্ত বাণিজ্য এলাকা আফ্রিকার ইউনিয়ন, পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকান কমন মার্কেট (সিওএমইসিএ) ও পূর্ব আফ্রিকান কমিউনিটির সদস্যরাষ্ট্র কেনিয়া। এসব কারণে আফ্রিকায় বাংলাদেশি পণ্যের বাজার তৈরিতে দেশটির সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কেনিয়ায় পোশাক, বস্ত্র, ওষুধ, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতে বিনিয়োগ আগ্রহী। দুদেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশ ও কেনিয়ার শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাব করেন তিনি।

সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ঢাকায় কেনিয়ার হাইকমিশন স্থাপন ও দুদেশের মধ্যে আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ দুদেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এর আগে, কেনিয়ার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত স্টেলা মোকায়া ওরিনা জানান, দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ও কেনিয়ার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মধ্যে এরইমধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে সম্পর্ক জোরদার করা গেলে দুই দেশই লাভবান হবে।

সভায় এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মেদ আলমগীর কেনিয়াতে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রেল অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, কেনিয়া সরকারের সহযোগিতা পেলে দেশটির স্থানীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশটিতে বিনিয়োগ করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

কেনিয়াতে বাংলাদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশাল সম্ভাবনা আছে জানিয়ে, তা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান পরিচালক এস এম শফিউজ্জামান।

পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী দুদেশের মধ্যে স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নের সহযোগিতা স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, দিল্লিতে অবস্থিত কেনিয়ার হাই কমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার আইরিন ওলো, ট্রেড কাউন্সেলর জেয়ার্ড বি. মাইয়্যেকা, এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হারুন, মো. নাসের, এস এম জাহাঙ্গির আলম (মানিক), সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির, আবু হোসেন ভুঁইয়া (রানু) ও মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

সভা শেষে এফবিসিসিআইয়ের মুজিব কর্নার পরিদর্শন করে প্রতিনিধিদল।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.