বিনিয়োগসীমা বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে নির্ধারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমার বাহিরে থাকবে বন্ডের বিনিয়োগ। একইসঙ্গে বিনিয়োগসীমা বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী- রুবাইয়াত- উল -ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার), কস্ট প্রাইজ ও বন্ডকে এক্সপোজার সীমার বাহিরে রাখার বিষয়ে বহুবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সম্প্রতি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এই বিষয়ে অবহিত করেছেন। এছাড়া এখন থেকে বন্ড বিনিয়োগ সীমার বাহিরে থাকবে, এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজার দরের পরিবর্তে ক্রয় মূল্যকে বিবেচনায় নেওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো বিএসইসির। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর এবিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থমন্ত্রলায় চিঠি পাঠিয়েছে। বর্তমানে এটি অর্থ সচিব মহোদয়ের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় বর্তমানে ব্যাংক খাতে কিছু আইন পরিবর্তনে কাজ করছে। সে আইনের সঙ্গে কস্ট প্রাইজের কোন সাংঘর্ষিক কিছু আছে কীনা-তা খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, কস্ট প্রাইজ গণনায় আইনে কোথায় কি বসবে সেগুলো নিয়ে এখন আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এক্সপোজার লিমিট ও বন্ডের বিষয়ে আমরা বেশ কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এখনো তাদের কোন জবাব পাইনি। অর্থমন্ত্রণালয়ের সাড়া পেলে এবিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত জানাতে পারবো।
এর আগে গত সোমবার (১৮ জুলাই) বিনিয়োগ সীমার সমস্যাটি সমাধানে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। পুঁজিবাজারবান্ধব গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই বিনিয়োগ সীমার সমস্যাটি সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে এই চিঠি পাঠায়।
দীর্ঘদিনের চাহিদা বিনিয়োগ সীমার সমস্যাটি সমাধানের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ঘনিষ্ঠতায় নতুন গভর্নর শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ নেবেন বলে বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন।
বিনিয়োগকারীদের এই আশার পেছনে রয়েছে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কমিশনে যোগদানের পর থেকেই শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সাবেক সিনিয়র অর্থ সচিব আব্দুর রউফের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ। যাদের মধ্যে দেশের অর্থনীতির স্বার্থে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সর্ম্পক্য খুবই ভালো। যে কারনে বিএসইসি চেয়ারম্যানের ডাকে সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেছেন আব্দুর রউফ। তবে তার গভর্নরের নিয়োগের মাধ্যমে আগের চেয়ে অনেক বেশি উপকৃত হবে শেয়ারবাজার।
আব্দুর রউফ তালুকদার সিনিয়র সচিব পদে থাকাকালীনই সর্বদা শেয়ারবাজারবান্ধব নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। দেশের শেয়ারবাজারের ক্রমবর্ধমান বিকাশে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স- ২০২১’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ও প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রেখে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।