ডলার নিয়ে কারসাজি: মানি এক্সচেঞ্জে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েকদিন পর আরও দাম বাড়বে বলে কেউ কেউ মজুত করছেন মার্কিন ডলার। কেউ যেন ডলার কিনে মজুত করতে না পারে সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০টি পরিদর্শন দল গতকাল অভিযান পরিচালনা করে। রাজধানীর পল্টন, বায়তুল মোকাররম, গুলশান ও বনানীর বেশকিছু মানি এক্সচেঞ্জ দোকানে তারা অভিযান পরিচালনা করেছেন বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক দলের একজন সদস্য।
তদন্ত দলের সদস্য নাম গোপণ রাখার শর্তে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য আছে ইচ্ছাকৃত ডলার মজুতের। কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছে যে ডলারের দাম সামনে বাড়বে। তাই ডলার এখন কম দামে কিনে রাখলে কয়েকদিনের মধ্যে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে। এসব গুজবের কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে মার্কিন ডলার মজুদ করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এ অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এসময় ডলারের একটা ক্রাইসিস চলছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। এরপরও কেউ যদি ডলার অবৈধভাবে মজুত করে রাখে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। আজকের (গতকাল) অভিযান এরই অংশ।’
একটি দোকানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘একটি দোকানে এক ক্রেতা এসেছিলেন। সে ৫ হাজার মার্কিন ডলার, ৩ হাজার ইউরো এবং পাউন্ড, ক্রোনা ও রিয়ালসহ প্রায় ১৫ হাজার ডলার সমমানের মুদ্রা নিয়ে এসেছিলেন বিক্রি করতে। তার সব টাকাসহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা হাতেনাতে ধরে ফেলে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এদিকে, এখন বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে মার্কিন মুদ্রা। সোমবার খোলা বাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হয় ১১২ টাকায়। গতকালও একই দামে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ডলার বিক্রি করে।
বায়তুল মোকাররমের একটি মানি এক্সচেঞ্জের দোকানি সোলায়মান জানান, আজ (গতকাল) আর দাম বাড়েনি ডলারের। ১১২ টাকাই চলছে দাম। আমরা কিনছি ২-১ টাকা কমে।
তদন্ত দলের আরও একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এমন অভিযান আরও পরিচালনা করা হবে। আজ থেকে শুরু হলো। যেখানেই অন্যায় হচ্ছে জানবো সেখানেই অভিযান হবে।’
গুজব ছড়িয়ে একটি পক্ষ ডলারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বলে জানান তিনি। এসব কথায় নিজের কষ্টের উপার্জনের টাকা বিনিয়োগ না করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যে কোন সময় ডলারের দাম কমে যেতে পারে। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়বেন এসব ক্রেতারা। এসব গুজবে কান না দিয়ে দেশের উন্নয়নে সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে।