প্রতিদিন প্রাইস দেখে ঘুম নষ্ট করার দরকার নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারীরা প্রতিদিন না হলেও ১০০ বার মনিটরে প্রাইস কত গেল, তা দেখে। কিন্তু আপনি যেহেতু বিনিয়োগ করেছেন, সেহেতু ৬ মাস- ১ বছর পর দর কোথায় গেল দেখবেন। প্রতিদিন প্রাইস দেখার দরকার নেই। এমন দেখতে গেলে আনরিয়েলাইজড দেখে মন খারাপ হবে। ফলে রাতে ঘুম কম হবে। যেহেতু জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করেছেন, সেখানে যদি প্রতিদিন প্রাইস দেখতে গিয়ে ঘুম না হয়, তাহলেতো হলো না। তাই প্রতিদিন প্রাইস দেখার দরকার নাই।
শনিবার (৩০ জুলাই) ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স ২০২২’-এ ‘দ্য স্মার্ট অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টর’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম বলেন, পাগল হয়ে বিনিয়োগ করা যাবে না। যেদিন মাথা খুব ঠান্ডা থাকবে, সেদিন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবেন। যেদিন মাথা ঠিক থাকবে না, সেদিন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার নেই। তবে আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা ওয়ার্ক ষ্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে ট্রেডারের হাত সরিয়ে দিয়ে নিজেরাই লেনদেন করতে চায়।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হয়। এরমধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করা। স্বল্পমেয়াদির থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ লাভজনক।
যখন সবাই বিক্রি করতে থাকে, তখন বাজার পতন হতে থাকে জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, ওই সময় হলো বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো সময়। যেটা এখন চলছে। এখন বাজার নিম্নমূখী আছে। অনেক মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার অবমূল্যায়িত আছে। তবে সবসময় পতনের সর্বোচ্চ সীমা ধারনা করা কঠিন। এ কারনে নিম্নমূখী বাজারে নিয়মিত কিনে গড় (এভারেজ) করতে হবে।
একসময় ঠিকই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। তখন বিনিয়োগ পজিটিভ হয়ে যাবে। একইভাবে যখন বাজার টানা বাড়তে থাকে এবং সবাই কিনতে চায়, তখন স্মার্ট বিনিয়োগকারীর বিক্রি করে মুনাফা নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, একজন বিনিয়োগকারী বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করবেন এবং ধৈর্য্য ধরবেন। আর স্পেকুলেটর অন্যের তথ্যে ও গুজবে বিনিয়োগ করবেন। সে চাইবে দ্রুত টাকা ডাবল করতে। এই করতে গিয়ে বিনিয়োগ উল্টো অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। সে সবসময় অধৈর্য্য হয়ে থাকবে। মার্কেট পড়লে ভয়ে লসে বিক্রি করে দেয় এবং বাজার যখন বাড়ে, তখন আবার বিক্রির দরের চেয়ে বেশিতে কিনে। তাই আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনি বিনিয়োগকারী নাকি স্পেকুলেটর হবেন।
আমাদের প্রাইমারি মার্কেটের (আইপিও) রিটার্ন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে এই নির্বাহি পরিচালক বলেন, শেষ ৫ বছরে আমরা ৪৭টি কোম্পানির আইপিও দিয়েছি। এরমধ্যে শেষ বছরে দিয়েছি ১৩টি কোম্পানি। যেখানে প্রথম বছরে গড়ে ৩৩০% রিটার্ন এসেছে। তাই এই মার্কেটে আপনারা আবেদন করবেন। এখন সবাই আনুপাতিক হারে শেয়ার পায়।
তিনি বলেন, আমরা ৮টা সিকিউরিটিজের বিশ্লেষনে শেষ ৫ বছরে ফিক্সড ডিপোজিটের থেকে বেশি রিটার্ন পেছি। তাই বিশ্লেষন করে ভালো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে পারলে লাভবান হওয়া সম্ভব।