আইজিপি জেনেশুনেই যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ জেনেশুনেই যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস সাক্ষাৎ করেন।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ)। এর মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীরও রয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রধানদের নিয়ে জাতিসংঘের তৃতীয় সম্মেলন শুরু হবে আগামী ৩১ আগস্ট। সম্মেলন চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে এ সম্মেলন হবে। জাতিসংঘের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদসহ ছয় কর্মকর্তার সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা।
নিষেধাজ্ঞার পর আইজিপি কি আমেরিকা যেতে পারবেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) যেটা বলেছেন ইউএনের (জাতিসংঘ) সঙ্গে তাদের একটা সমঝোতা রয়েছে। সে অনুযায়ী এটা প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেটা শেষ হয়ে এলে নিশ্চিত করতে পারবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা তো মনে করি, ইউএন যখন তাকে (আইজিপি) দাওয়াত দিয়েছে তিনি যাবেন। এজন্য যা প্রয়োজন তিনি সেগুলোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। জেনেশুনেই যাবেন তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আর কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, উনি বলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। ইলেকশন পর্যন্ত এটা ঠিক থাকবে কি না জানতে চেয়েছেন। আমি বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট তিনি একটি পিসফুল এটমসফেয়ার কন্টিনিউ করবেন আপ টু ইলেকশন। লট অব ডেমনস্ট্রেশন হচ্ছে, লট অব মিটিং হচ্ছে আমাদের এখানে কোনো ইয়ে নাই।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমাদের বলতে চেয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তা এগিয়ে নিতে এবং অন্য কোনো সেক্টরে তারা সহযোগিতা করতে পারে কি না সেগুলো জানতে চেয়েছেন। তারা মানবপাচার বন্ধে কাজ করতে ইচ্ছুক। আমাদের নিরাপত্তার জন্য যদি কিছু প্রয়োজন হয় সেখানে সহযোগিতা করতে পারে। তারা আমাদের আগেই দু-তিনটি জায়গায় সহযোগিতার জন্য লিখিত প্রস্তাব দিয়েছিল, সেখানে আমরা এরই মধ্যে খুব শিগগির সমঝোতা স্মারক সই করবো। এখন এগুলো শেষ পর্যায়ে আছে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে আমি বলেছি, এ বিষয় তোমাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সহযোগিতা আমরা লক্ষ্য করেছি। এই সমস্যা সমাধানে তারা তাদের কণ্ঠস্বর আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করি আমরা। এ বিষয়ে যে সহযোগিতা এখন আছে সেটা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহের কথা জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় কোস্টগার্ডকে আগে তারা সহযোগিতা করেছে, সেটা করার জন্য এবং আমাদের বিজিবির কিছু ইনঅ্যাক্সেসেবল জায়গা আছে সে জায়গা কীভাবে স্ট্রং করতে পারি সে বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের কথা বলেছি।
র্যাবের ওপর দেওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও কথা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, র্যাবের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যেভাবে র্যাবের কাজ করা উচিৎ ছিল সেভাবে কাজ করেনি বলেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা বলেছি, র্যাব কোনো বেআইনি কাজ করলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।
‘আমি বলেছি, এখন র্যাব ও পুলিশ সদস্যরাও কারাগারে আছেন, যারা গাফিলতি করেছেন। আমি একটা ঘটনার কথা বলেছি, নারায়ণগঞ্জে যে সেভেন মার্ডার হয়েছিল সেই অফিসারদের আজকে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হয়েছে। তারা হায়ার কোর্টে আপিল করেছে, সে প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশের যে সদস্য অন্যায় করছেন তাদেরও শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি এও বলেছি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি সেলফ ডিফেন্সে গুলি করে থাকে। সেটা যথাযথ হয়েছে কি না নিশ্চিত করার জন্য একজন মাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয় ঘটনার পরপরই। তিনি যদি মনে করেন এটা যথাযথ হয়নি তাহলে সেই সদস্যকে ট্রায়াল ফেস করতে হয়।