জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সিএসইর শোক সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে শোক সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বুধবার (১৭ আগস্ট) এই শোক সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিএসইর আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
অন্যান্য আলোচকরা হলেন: সিএসইর পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ। এ সময় সিএসইর পরিচালক প্রোফেসর এস এম সালামত উল্লাহ ভুঁইয়া, মো. রেজাউল ইসলাম এবং জনাব মোঃ সিদ্দিকুর রহমান উপস্থিথ ছিলেন।
এতে আরও অংশগ্রহণ করেন, সিএসই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ গোলাম ফারুক এবং সিএসই এর সকল কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রধান আলোচক সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের আত্মত্যাগ বিশ্বে অদ্বিতীয়। আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপকে এবং তাঁর ও তাঁর পরিবারের সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস মানে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস। তাকে নিয়ে এই সীমিত সময়ে আলচনায় করে শেষ করা যাবে না। তাঁর ক্ষণস্থায়ী জীবনে যা ই করেছেন তার সবই দেশের জন্য করেছেন। ১৪ বছর কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরার সময়ই প্রথম তাঁর দাবি দাওয়া আদায়ের প্রবল পদক্ষেপ আমারা দেখতে পাই। সেসময়ে তিনি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি আদায়ের জন্য বহিষ্কৃত হন তবুও তিনি মাথা নত করেননি। সেসময় বাঙ্গালী জাতি ছিল সব দিকে শোষিত এবং অবহেলিত, এমনকি তারা কর্মস্থলে এবং ব্যবসার ক্ষেত্রেও ছিল তাচ্ছিল্যপূর্ণ ব্যবহারের স্বীকার। সরকারী বা পদস্থ কোন স্থানে তাদেরকে সুযোগ দেয়া হত না। বঙ্গবন্ধু এইসব ব্যাপারেও ছিলেন সোচ্চার, চেয়েছেন পরিবর্তন, এমনকি পদক্ষেপ ও নিয়েছিলেন বাংলাদশে কন্ট্রোলার অফিস করার।
স্বাধীন দেশে তিনি পা রাখেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত নয় মাসব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর সমগ্র বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। শেখ মুজিব এই ধ্বংসযজ্ঞকে “মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ধ্বংসযজ্ঞ” হিসেবে উল্লেখ করে ৩০ লাখ মানুষ নিহত ও ২ লাখ নারীর ধর্ষিত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময়। ১৯৭২ সালে অর্থনীতির আকার মাত্র আট বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য। সঞ্চয় জিডিপির মাত্র ৩ শতাংশ। বিনিয়োগ জিডিপির ৯ শতাংশ। পুরো অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত। এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, দেশের ভেতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত ২০ লাখ মানুষের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করার চ্যালেঞ্জ। তবু তিনি অল্প সময়েই প্রণয়ন করেছেন সংবিধান, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও শিক্ষা কমিশন। স্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক। করেছেন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সমান গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের ওপর। আমরা আজ অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রনয়নের কাজ করছি যার ভিত্তি হল বঙ্গবন্ধুর সেই প্রথম পরিকল্পনার অংশ, এমনকি শিল্প ক্ষেত্রে ও যে পরিবর্তন তাও তাঁর দূরদর্শী চিন্তার অংশ।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত। বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাবার সংগ্রামে এখন দেশ লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতোনা। পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।