সামনে নির্বাচন, কে কত জনপ্রিয় প্রমাণ হয়ে যাবে : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সামনে নির্বাচন, অপেক্ষা করুন। কে কত জনপ্রিয় প্রমাণ হয়ে যাবে। অপেক্ষা করুন, বাংলাদেশের মানুষ কী চায় প্রমাণ হয়ে যাবে। নির্বাচনের বিরুদ্ধে কেন বলেন? প্রমাণ করতে হবে নির্বাচন দিয়ে। শেখ হাসিনা জনপ্রিয়। তার সঙ্গে আছে বাংলাদেশের মানুষ। তার উন্নয়ন অর্জনে বাংলাদেশের মানুষ খুশি।
রোববার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হতাহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নেত্রী আপনি অনেককে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার যারা মাস্টার মাইন্ড, একুশে আগস্টেরও মাস্টার মাইন্ড তারা। হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘হাওয়া ভবনের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে আমরা অপারেশন শুরু করেছিলাম।’ এ সত্য কি অস্বীকার করতে পারবেন?
তিনি বলেন, কে বলেছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর— ওয়েল ডান মেজর ডালিম, ইউ হ্যাভ ডান এ গ্রেট জব। আজ সত্য অস্বীকার করবেন না। বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে অনেকেই কথা বলেন, আমাদের বন্ধু দেশগুলোও কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন বাংলাদেশে এই আবিষ্টটা? আমাদের অফসেশন আছে। এই দল, তাদের প্রতিষ্ঠাতা, আমাদের পিতার হত্যার সঙ্গে জড়িত। জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। বিচার রোধকারী ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স আইনে পরিণত করেছে পঞ্চম সংশোধনী। অস্বীকার করতে পারবেন? এই প্রশ্ন বহুবার করেছি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জবাব পাননি বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, রাজনৈতিক সম্পর্কের এই দেয়াল একুশে আগস্টে এসে আরও উঁচুতে গেছে। এর সৃষ্টি করেছে বিএনপি। তারপরও শেখ হাসিনা তাদের গণভবনে ডাকেন, সংলাপ করেন। টেলিফোনে কথা বলে অপমানিত হন।
তিনি বলেন, ছেলে মারা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ছুটে গিয়েছিলেন শোকাহত মাকে সান্ত্বনা দিতে। ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের গেট প্রধানমন্ত্রীর মুখের উপর বন্ধ করে দেওয়া হলো। সেদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে আপনারাই বাংলাদেশে রাজনৈতিক সম্পর্কের দেয়ালকে আরও উঁচুতে তুলেছেন। আপনারাই সেদিন প্রকারান্তরে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ এ নেতা বলেন, তবুও বঙ্গবন্ধু কন্যা আপনাদের সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করেছেন। আজ মিথ্যা কথা বলেন, মিথ্যাচার করেন। জনপ্রিয়তা নাকি তলানিতে। জনপ্রিয়তা দেখবেন? এই কয়দিন তো আমরা কিছু করিনি, শেখ কামালের মাজারে, বঙ্গমাতার মাজারে, বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরে, টুঙ্গিপাড়ায় জনতার যে ঢল সে বাঁধভাঙা স্রোত দেখেছেন?
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব, পল্টনে আর প্রেস ক্লাবে নির্দিষ্ট জায়গায় সমাবেশ করে তলানিতে নিয়েছেন আপনাদের জনপ্রিয়তা। আমি বলব, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে পঁচাত্তর পরবর্তীকালে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এ সত্য শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্ব আজ স্বীকার করে।
তিনি বলেন, আপনাদের বুকে ব্যথা আপনাদের গা জ্বলে। আপনাদের যন্ত্রণা কোথায় আমরা জানি, একুশে আগস্ট মারতে পারেননি। তিনি কেন বেঁচে আছেন। একজনকে সরিয়ে দিতে হবে। এটাই আপনাদের চক্রান্ত। সেই চক্রান্ত এখনও চলছে। এই দলটি চিরদিন আমাদের শত্রু ভেবেছে। এত উদারতা দেখানোর পরও শেখ হাসিনাকে শত্রু হিসেবে বেছে নিয়েছে। এই দলের নেতারা সত্য কথা বলে না। এরা প্যাথলজিকাল লায়ার। এরা মিথ্যা কথা বলে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখানে ১৪ দলের নেতারা আছেন। এগুলো বলার দায়িত্ব শুধু আমাদের নয়, আপনাদের সবার। একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস হয়? আগে কেক কেটে ভুয়া জন্মদিবস পালন করত। আমরা ভেবেছিলাম এবার করবে না। ঠিকই ১৬ আগস্ট, আগের দিন কেক কাটেনি। ১৬ তারিখে বেগম জিয়ার জন্মদিনের দোয়া মাহফিল হয়েছে, কেক কেটেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলবেন কী একটা মানুষের কয়টা জন্মদিবস? সর্বশেষ করোনা টেস্টে পাওয়া গেল, তার ষষ্ঠ জন্মদিবস। ১৫ আগস্ট কেন পালন করেন? এই ভুয়া জন্মদিবসের জবাব দিতে হবে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে বলি, যেই দলের নেতার এতগুলো জন্মদিবস, তাকে কি বিশ্বাস করেন? তাদের বিশ্বাস করা যায়? তাদের ওপর আস্থা রাখা যায়?