আজ: সোমবার, ২০ মে ২০২৪ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ অগাস্ট ২০২২, রবিবার |

kidarkar

আরও ৮ ব্যাংক শাস্তির মুখে

এ জেড ভূঁইয়া আনাস: কৃত্রিম উপায়ে ডলারের সঙ্কট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত মুনাফা করায় ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ ও এমডিদের শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবার সেই তালিকায় আরও ৮ ব্যাংক যুক্ত হতে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্যাংকগুলো হলো–ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক। এর আগে ডলার কেনা-বেচার মাধ্যমে অস্বাভাবিক মুনাফার দায়ে ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের অপসারণের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম শেয়ারবাজার নিউজকে বলেন, ‘ডলারের বাজার স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমাদের কর্মকর্তারা সব ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন যাচাই করবেন এবং ডলার লেনদেন থেকে অস্বাভাবিক লাভ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।’

সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন থেকে সর্বোচ্চ ৭৭০ শতাংশ মুনাফা বেড়েছে ব্যাংক এশিয়ার। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ডলার কেনাবেচা করে ব্যাংকটি মাত্র ২৩ কোটি টাকা লাভ করেছিল। অন্যদিকে চলতি বছরের একই সময় শেষে ব্যাংকটি লাভ করেছে ২০০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮ গুণ বেশি।

এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসে ৫০৪ শতাংশ বা ১২৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। একই সময়ে এনসিসি ব্যাংক ৫০০ শতাংশ বা ১০০ কোটি টাকা, ব্র্যাক ব্যাংক ৪১৭ শতাংশ বা ৭৫ কোটি টাকা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ৪০৩ শতাংশ বা ১১৭ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংক ৩৫৩ শতাংশ বা ১০৬ কোটি টাকা, সিটি ব্যাংক ৩৪০ শতাংশ বা ১৩৬ কোটি টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২৪৫ শতাংশ বা ১২০ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২৩৪ শতাংশ বা ৯৭ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০৫ শতাংশ বা ১৩৫ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংক ১৫৯ শতাংশ বা ৪৩ কোটি টাকা এবং ইসলামী ব্যাংক ১৪০ শতাংশ বা ১৩৬ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ছয় মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৬ বার টাকার অবমূল্যায়ন করে। ডলারের তীব্র সংকটে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার ছাড়তে বাধ্য হয়, ফলে চলতি বছরের ছয় মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় চার বিলিয়ন হ্রাস পায়। ডলারের বাজারের অস্থিরতার মাঝে কয়েকটি ব্যাংক ডলার প্রতি ৫ টাকার বেশি লাভ করেছে, যা ডলার সংকটকে আরও তীব্র করে তুলেছে। তাই ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ শেয়ারবাজার নিউজকে বলেন, ‘ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে ডলারের মুনাফা বৃদ্ধি সম্পর্কে জানতে চাওয়া একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এ ধরনের অনিয়মে শুধু ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারাই জড়িত থাকে না। তাদের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। তাই বিষয়গুলো আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.