আজ: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ অগাস্ট ২০২২, বুধবার |

kidarkar

২০২১-২২ অর্থবছরে

সরকার তামাকপণ্য থেকে রাজস্ব হারিয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সঠিক কর কাঠামোর অভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার তামাকপণ্য থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। সিগারেটের প্যাকেটে মুদ্রিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এবং গবেষণায় পাওয়া বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের খুচরা বিক্রয় মূল্যর পার্থক্য থেকে কর হিসেবে সরকারের প্রাপ্য অংশ হিসাব করে গত অর্থবছরের সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতি বের করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ শীর্ষক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্স এবং বিএনটিটিপি এ সেমিনার আয়োজন করে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, অতিউচ্চ স্তরের সিগারেটের ২০ শলাকার প্যাকেট মুদ্রিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৭০ টাকা হলেও বিক্রিত গড় মূল্য ২৯৪ দশমিক ২৯ টাকা। সে হিসাবে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের ওপর থেকে কর আদায় করা সম্ভব হলে উচ্চস্তরের সিগারেট থেকে সরকার আরও প্রায় ৫৮৩ কোটি টাকা বেশি পেতে পারতো। একইভাবে উচ্চস্তর থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা, মধ্যমস্তর থেকে প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা এবং নিম্নস্তর থেকে আরও ৩ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা অতিরিক্ত কর আদায় সম্ভব হতো।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, এত অল্প শেয়ার নিয়ে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর বোর্ডে এত জন সরকারের মানুষ পরিচালক থাকাটা দেখতেও কেমন লাগে। আমরাও চাই তামাকের ব্যবহার কমে আসুক। সমন্বিতভাবে তামাকের ব্যবহর কমাতে হবে। আমার জায়গা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করবো।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খন্দকার। আলোচক ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর ফ্রিকিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মাহফুজুর রহমান, ওয়া- হেলথ অর্গানাইজেশন বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক এবং দ্য ইউনিয়নের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা হক ও সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানের অ্যাড ভ্যালোরেম করারোপ পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতি আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি দ্রব্যের বাজার ও বিক্রয় পর্যবেক্ষণে এবং কর আদায়ে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এছাড়া সিগারেটের চার স্তরভিত্তিক কর কাঠামো ধারাবাহিকভাবে এক স্তরে নিয়ে আসতে হবে। সিগারেট ও বিড়ির খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ, এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে এবং ভোক্তারাও তামাক গ্রহণে উৎসাহিত হচ্ছে। কর ফাঁকি রোধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সামগ্রিক সমস্যা মোকাবিলা করতে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একটি জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.