আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৫ অগাস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

যেভাবে মিলবে গম ভুট্টা চাষীদের জন্য প্রণোদনা ঋণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: গম ও ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে কিভাবে ঋণ পাওয়া যাবে তার শর্তসহ একটি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এসংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতে গম ও ভুট্টা চাষে এ স্কিম চালু করা হয়েছে। বর্তমান সংকটের কথা মাথায় রেখে সরাসর কৃষকদের মাঝে ঋণ বিতরণ করবে ব্যাংকগুলো। বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ০.৫০ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। কৃষকদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদ আদায় করা যাবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ৩ বছরের এ স্কিমের মেয়াদ শুরু হবে।

প্রজ্ঞপনে বলা হয়, স্কিমের নাম হবে গম ও ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম। স্কিমের আওতায় তহবিলের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এই তহবিল সরবরাহ করা হবে। স্কিমের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রয়োজনে স্কিমের মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।

(ক) পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ঋণ সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতাভুক্ত ব্যাংকসমূহের মধ্যে ইচ্ছুক ব্যাংকসমূহকে কৃষি ঋণ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি (পার্টিসিপেশন এগ্রিমেন্ট) সম্পাদন করতে হবে। অংশগ্রহণ চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যাংকসমূহের অর্থবছর ভিত্তিক চাহিদার ভিত্তিতে উক্ত ব্যাংকসমূহের অনুকূলে তহবিল বরাদ্দ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনের নিরিখে বরাদ্দের পরিমাণ পুনঃনির্ধারণ করতে পারবে। কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পর পেশকৃত পুনঃঅর্থায়ন দাবী পর্যালোচনাপূর্বক পর্যায়ক্রমে বরাদ্দকৃত তহবিলের সমপরিমাণ পুনঃঅর্থায়ন করা হবে।

এ স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহকে নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। গম ও ভুট্টা চাষের উপযোগী অঞ্চলসমূহে এ স্কিমের আওতায় ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় উল্লেখিত গম ও ভুট্টা চাষের ঋণ নিয়মাচার অনুযায়ী ব্যাংকসমূহ কৃষকদের অনুকূলে ঋণ বিতরণ করতে পারবে।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ভূমিহীন কৃষক (যাদের জমির পরিমাণ ০.৪৯৪ একরের কম), ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক (যাদের জমির পরিমাণ ০.৪৯৪ একর থেকে ২.৪৭ একর) এবং বর্গাচাষিদেরকে এ স্কিমের আওতায় এককভাবে জামানত বিহীন (শুধুমাত্র ফসল দায়বন্ধনের বিপরীতে) সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা যাবে। এছাড়া অন্যান্য কৃষকের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাইপূর্বক ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণপূর্বক এ স্কিমের আওতায় বিতরণ করতে পারবে।এ স্কিমের আওতায় গৃহীত ঋণ দ্বারা কোনভাবেই পুরাতন ঋণ সমন্বয় করা যাবে না। সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী কোন কৃষক খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হলে এ স্কিমের আওতায় ঋণ প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে না।

এ স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ০.৫০ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। কৃষক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ (সরল হারে)। উক্ত সুদ/মুনাফা হার সকল গ্রাহকের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য হবে। কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ফসল উৎপাদনের পঞ্জিকা ও ঋণ পরিশোধ সূচি’তে উল্লিখিত গম ও ভুট্টা চাষের উৎপাদন পঞ্জিকা ও পরিশোধ সূচি অনুযায়ী কৃষক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণের মেয়াদ নির্ধারিত হবে। অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের তারিখ হতে অনধিক ৮ মাসের মধ্যে আসল এবং সুদ/মুনাফা (বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ০.৫০% সুদ/মুনাফা হারে পরিশোধ করবে।

 

কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ শুরু করার পর অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহকে মাসিক ভিত্তিতে পুনঃঅর্থায়ন এর অর্থ প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় তথ্য/কাগজপত্রসহ পরিচালক, কৃষি ঋণ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয় এর নিকট পুনঃঅর্থায়নের জন্য আবেদন করবেঃ – প্রকৃত বিতরণ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র; – বিতরণকৃত ঋণের সমন্বিত বিবরণী (সংযুক্ত ছক-১ মোতাবেক); – ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতিপত্র (ডিপি নোট); – সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য।

ব্যাংকের অনুকূলে ছাড়কৃত অর্থের নির্ধারিত মেয়াদ পূর্তির মধ্যেই সুদ/মুনাফাসহ গৃহীত আসলের সমুদয় অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে

পরিশোধ করতে হবে। কৃষক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের সকল দায়-দায়িত্ব ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকের ওপর ন্যস্ত থাকবে। কৃষক পর্যায়ে ঋণ আদায়ের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না। ঋণের বকেয়া নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে পরিশোধিত না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব বিকলন করে তা আদায়/সমন্বয় করা হবে। স্কিমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের অর্থ বা এর কোন অংশের সদ্ব্যবহার হয়নি মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট প্রতীয়মান হলে এবং বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে ৪% এর অধিক সুদ/মুনাফা আদায় করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সে পরিমাণ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ২% হারে সুদ/মুনাফা ধাৰ্যপূর্বক এককালীন আদায় করা হবে।

এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত প্রতিটি ঋণের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে। (খ) বাংলাদেশ ব্যাংক হতে অর্থায়ন প্রাপ্তির পর নিবিড় মনিটরিং এর লক্ষ্যে ঋণ বিতরণের পুঞ্জিভুত বিবরণী (সংযুক্ত ছক-২ মোতাবেক) বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগে মাসিক ভিত্তিতে (মাস সমাপনান্তে ০৭ কর্মদিবসের মধ্যে) দাখিল করতে হবে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.